ঢাকা : পরিচয়হীন রাস্তায় পড়ে থাকা অনাথ অবুঝ শিশুদের শেষ আশ্রয় ছোটমণি নিবাসে। ছোটমণি নিবাসে মা-বাবা হারা এতিম এই শিশুদের মাতৃস্বেহে লালন পালন করা হয়। ছোটমণি নিবাসে গিয়ে দেখা যায়, অভিভাবকহীন শিশুরা এতোটাই আস্থা ফিরে পেয়েছেন যে সবাই সবসময় পুরো ঘরটিকে মাতিয়ে রাখছে। সবাই একসঙ্গে খেলাধুলা করে, কেউ কেউ পড়াশোনা করছে, বাইরে থেকে কেউ আসলে দেখা যায় তাদের জড়িয়ে ধরে আনন্দে চিৎকার করছে। পিছে পিছে ঘুরছে, লাফালাফি করছে। কোলে ওঠছে। ছবি তোলার জন্য ব্যস্ত হচ্ছে। খাবার সময় হলে একসঙ্গে খাবার খেতে দৌড়ে যাচ্ছে। নতুন শিশু আসলে তাকে দেখে তারা আনন্দে আত্মহারা।
জানা গেছে, ছোটমণি নিবাসে একটা শিশু শূণ্য থেকে ৭ বছর বয়স পর্যন্ত অবস্থান করে। যাদের বেশির ভাগ পিতৃ-মাতৃ পরিচয়হীন, পরিত্যক্ত, পাচার হতে উদ্ধার, হাসপাতালে ফেলে যাওয়া, হারিয়ে যাওয়া শিশু, যাদের দাবিদার কেউ নেই। সমাজসেবা অধিদফতর ৬ বিভাগে অবস্থিত ৬টি ছোটমণি নিবাসে এই সকল শিশুদের মাতৃস্নেহে প্রতিপালন, রক্ষণাবেক্ষণ, খেলাধুলা ও সাধারণ শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা, ও বিনোদনের ব্যবস্থা করে। সাত বছর বয়সের পর এদের সরকারি শিশু পরিবারে স্থানান্তর করে। এখানে ২৮-৩০ জনই অবস্থান করে।
বিষয়টি নিয়ে জানাতে চাইলে রাজধানীর আজিমপুর ছোটমণি নিবাসের উপতত্ত্বাবধায়ক জুবলি বেগম রানু সোনালীনিউজকে বলেন, ছোটমণি নিবাস ওই সকল শিশুরা আসে, যে শিশুর ১দিন বয়স থেকে ৬ বছর পর্যন্ত যার কোন দাবিদার কেউ নাই। অভিভাবক নাই। পরিবার নাই। সেই শিশু যাকে রাস্তা থেকে তোলা হয়। এরপর জিডি হয়। জিডির পর আইনের মাধ্যমে হউক। বা হাসপাতালে কেউ ফেলে গেলে। হাসপাতালের মাধ্যমে এই শিশুরা এখানে আসে। বর্তমানে এখানে ২৮ শিশু আছে।
এদিকে ছোটমণি নিবাসে আসা ছোট্ট এই সোনামণিদের সুন্দর সুন্দর নাম রাখা হয়। কারও নাম ফাতেমা। কারও নাম আঁখি, আহনাব, অনু, আদনান, আবিদা, লামিয়াসহ বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর নাম।
সুন্দর নামা রাখার বিষয়ে সহকারি সেবিকা লাভলী পারভিন সোনালীনিউজকে বলেন, যখন জিরো বাচ্চা আসে তখন নাম গুলো আমরাই দেই। হারানো বাচ্চা। যেগুলো ১-২ বছরের মধ্যে ওরাতো নিজের নাম বলতে পারে না। তখন আমরা ওদের একটা ইসলামিক সুন্দর নাম দিয়ে থাকি। ২ বছরের ওপরের বাচ্চা যার নিজেদের নাম বলতে পরে অর্থাৎ যেই নামটা ওরা নিয়ে আসে ওটায় থাকে। অনেক ক্ষেত্রে হারানো বাচ্চাদের পুলিশও নাম দিয়ে থাকে। কারণ হারিয়ে গেলে অনেক সময় তারা নিজের বিভিন্ন নাম বলে থাকে। তখন পুলিশ সুন্দর একটা নাম দিয়ে দেয়।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ
আপনার মতামত লিখুন :