• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সীমান্তে বিজিবির গুলিবর্ষণে হবে এক্সিকিউটিভ ইনকোয়ারি


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১৩, ২০২৩, ০৯:১৫ পিএম
সীমান্তে বিজিবির গুলিবর্ষণে হবে এক্সিকিউটিভ ইনকোয়ারি

ঢাকা:  সীমান্তের আট কিলোমিটারের বাইরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের মাধ্যমে গুলিবর্ষণের ঘটনার নির্বাহী তদন্তের (এক্সিকিউটিভ ইনকোয়ারি) সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। 

এছাড়াও যুগোপযোগী করা হচ্ছে টাউট আইন ১৮৭৯ ও বঙ্গীয় প্রকাশ্য জুয়া আইন, ১৮৬৭। মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ এ তফসিলভূক্ত করা হবে দন্ডবিধি ১৭০/১৭১/৪১৯। জেলের অভ্যন্তরে চালু হবে মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সুবিধা।

গত ২৪-২৬ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনে জেলা প্রশাসকের প্রস্তাব আমলে নিয়ে এসকল সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সম্মেলনের তৃতীয় দিবসের ষষ্ঠ কার্যঅধিবেশনে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা প্রশাসক বলেন, সীমান্তের আট কিলোমিটারের বাইরে বিজিবি সদস্য কর্তৃক গুলিবর্ষনের ঘটনা হলে পুলিশ রেগুলেশন ১৯৪৩ এর ন্যায় বিজিবির ক্ষেত্রেও গুলিবর্ষের যৌক্তিকতা যাচাইয়ে নির্বাহী তদন্তের (এক্সিকিউটিভ ইনকোয়ারি) বিধান করা যেতে পারে।

নরসিংদীর জেলা প্রশাসক বলেন, বংগীয় প্রকাশ্য জুয়া আইন, ১৮৬৭ এর ০৩ ধারা সংশোধনপূর্বক বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে জুয়া খেলাকেও জুয়ার স্থান হিসেবে অর্ন্তভূক্ত করা যেতে পারে। বংগীয় প্রকাশ্য জুয়া আইন, ১৮৬৭ এর বিভিন্ন ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি ২ বছরের কারাদন্ডসহ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড প্রদানের বিধান রাখা যেতে পারে।

টাউট আইন ১৮৭৯ এর ৩৬ ধারায় অন্যান্য দপ্তরের টাউট/দালালদের প্রকাশ্য তালিকা প্রণয়ন ও জেলা প্রশাসকের অনুমোদনের বিধান রাখা যেতে পারে। টাউট আইন ১৮৭৯ এর ০৬ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি ৬ মাসসহ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ডের বিধান রাখা যেতে পারে। নরসিংদী জেলার পাচদোনাতে একটি আধুনিক ফায়ার স্টেশন স্থাপনের উদ্যেগ নেওয়া যেতে পারে।

সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ এ দন্ডবিধি ১৭০/১৭১/৪১৯ ধারা তফসিলভূক্ত করার প্রস্তাব করেন। জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক দন্ডবিধির ১৮৮ ধারায় অর্থদন্ডের পরিমাণ বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করেন। কারাগারে বন্দীদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুবিধার্থে ভিডিও কলের মাধ্যমে আত্মীয় স্বজনদের সাথে কথা বলার ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব করেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক।

মাদকসেবী কয়েদিদের জন্য জেলখানার অভ্যন্তরে মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সুবিধা চালুর প্রস্তাব করেন জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক। উপজেলা পর্যায়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা পদায়ন এবং তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেন মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক।

এই অধিবেশনের প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীআসাদুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আসন্ন নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুরুদায়িত্ব রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহীনিকে সে সময়ে কাজ করতে হবে। অনলাইনে সাইবার ক্রিমিনালরা প্রবেশ করে বিভিন্ন নতুন ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। পুলিশকেও এসব অপরাধীদের মোকাবেলায় দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে। নরসিংদীর রায়পুরা যাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধারে ব্যবস্থা নেওয়া হয় সে বিষয়ে পুলিশকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

অনলাইন জুয়া বন্ধে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মাদক নির্মূলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে দেশের কারাগারগুলোয় ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি কয়েদি রয়েছে। নিরাপত্তা বিষয়ক কোনো সমস্যা হলে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একসঙ্গে বসে সমস্যা সমাধানে কাজ করার নির্দেশনা দেন তিনি।

অধিবেশনের প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করে সীমান্তের আট কিলোমিটারের বাইরে বিজিবি সদস্য কর্তৃক গুলিবর্ষণের ঘটনা হলে পুলিশ রেগুলেশন ১৯৪৩ এর ন্যায় বিজিবির ক্ষেত্রেও গুলিবর্ষণ যৌক্তিকতা যাচাইয়ে এক্সিকিউটিভ ইনকোয়ারি, বংগীয় প্রকাশ্য জুয়া আইন, ১৮৬৭ এর কতিপয় ধারা সংশোধন করে যুগোপযোগী করা, টাউট আইন, ১৮৭৯ এর কতিপয় ধারা সংশোধন করে যুগোপযোগী করা, দন্ডবিধি ১৭০/১৭১/৪১৯ মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ এ তফসিলভূক্ত করা, কারাগারে বন্দীদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুবিধার্থে ভিডিও কলের মাধ্যমে আত্মীয় স্বজনদের সাথে কথা বলার ব্যবস্থা, ভোলা জেলায় আধুনিক নিরাপত্তা সুবিধা সম্বলিকত কারাগার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ, মাদকসেবী কয়েদিদের জন্য জেলখানার অভ্যন্তরে মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সুবিধা চালু, রাঙ্গামাটি জেলার সদর, লঙগদু, বরকল, বিলাইছড়ি ও জুরাছড়ি উপজেলায় নৌ-ফায়ার স্টেশন স্থাপনের উদ্যেগ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনে ডুবুরি টিম গঠনের জন্য ডুবুরি পদ সৃজন ও বান্দরবান জেলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনে ১টি ৪৩০০ লিটার পানি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ফোর হুইলার গাড়ী, ১টি ফোর হুইলার পাম্পটানা গাড়ী, ১টি এম্বুলেন্স, ১টি ফোম টেন্ডার গাড়ী প্রদান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ফায়ার ফাইটারদের জন্য ওয়াকিটকি প্রদান, উপজেলা পর্যায়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা পদায়ন এবং তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে অবহিত করা এবং সোনাহাট স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চালুর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

সোনালীনিউজ/এআর

Wordbridge School

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!