• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মেগা ৯ প্রকল্পে খরচ ১ লাখ ৫০ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা


নিজস্ব প্রতিবেদক  মে ২৯, ২০২৩, ০৯:৩০ পিএম
মেগা ৯ প্রকল্পে খরচ ১ লাখ ৫০ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা

ফাইল ছবি

ঢাকা: আগামী অর্থবছরের জন্য বড় ধরণের নয়টি প্রকল্পে প্রাথমিক খরচ ধরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) যুক্ত করা হয়েছে। মেট্রোরেল লাইন-২, দ্বিতীয় পদ্মাসেতু, কমলাপুরে মাল্টি মডেল হাম নির্মাণ, ঢাকা ইষ্ট-ওয়েষ্ট এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম টু কক্সবাজার হাইওয়ে উন্নয়ন, বে টার্মিনাল নির্মাণসহ মোট ৯টি মেগা প্রকল্পে প্রাথমিক খরচ প্রাক্কলন করা হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। তবে এই পিপিপি খাতে আগামী বছর ৭৯টি প্রকল্পকে রাখা হয়েছে। সবগুলোকে বাস্তবায়নে প্রাথমিক খরচের ধারণা দেয়া হয়েছে প্রায় তিন লাখ কোটি টাকা বলে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে।

পরিকল্পনা কমিশনের ও এডিপির তথ্য থেকে জানা গেছে, পিপিপিতে নেয়া প্রকল্পগুলোর বেশির ভাগই সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় রয়েছে। বড় খরচের প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে, ২৯ হাজার ৫৭১ কোটি টাকায় মেট্রোরেল লাইন-২ প্রকল্প। আর এর এলাকা হলো, গাবতলী – এমব্যাংকমেন্ট রোড-বসিলা-মোহাম্মদপুর বিআরটিসি বাস স্ট্যান্ড-সাত মসজিদ রোড ঝিগাতলা-ধানমন্ডি ২নম্বর রোড-সাইন্স ল্যাবরেটরি-নিউ মার্কেট-নীলক্ষেত-আজিমপুর-পলাশী-শহীদ মিনার-ঢাকা মেডিকেল কলেজ-পুলিশ হেডকোয়ার্টার-গোলাপ শাহ মাজার-বঙ্গ ভবনের উত্তর পার্শ্বস্থ সড়ক-মতিঝিল-আরামবাগ-কমলাপুর-মুগদা-মান্ডা-ডেমড়া-চট্টগ্রাম রোড। ১২ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মহাসড়কের উন্নয়ন করা। ১২ হাজার ৯৯৬ কোটি ৫০ লাখ টাকায় আউটার লিং রোডের নির্মাণ। 

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের ব্যয় হবে ১০ হাজার ৫৬৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ঢাকা ইষ্ট ওয়েষ্ট এডিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। আর পাটুরিয়া থেকে গোয়ালন্দতে পদ্মা নদীতে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু করা হবে। এতে খরচ ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর পানি সরবরাহ প্রকল্পে খরচ হবে ১৫ হাজার কোটি টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ  ১৭ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বে টার্মিনাল করবে। যার সমীক্ষা কার্যক্রম চলমান আছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে কমলাপুরে মাল্টি মডেল হাব নির্মাণ প্রকল্পে খরচ ধরছে ২২ হাজার ৫৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এই প্রকল্পের জন্য পরামর্শক নিয়োগ পর্যায়ে রয়েছে। 

পিপিপির অন্যান্য প্রকল্পগুলো হলো, আপগ্রেডেশন ঢাকা-বাইপাস চার লেন সড়ক (মদনপুর-দেবগ্রাম-ভুলতা-জয়দেবপুর) প্রকল্প। এটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৫১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বর্তমানে নির্মাণাধীন পর্যায়ে আছে। হাতিরঝিল-রামপুরা-বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ-আমুলিয়া-ডেমরা হাইওয়ে সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ, ব্যয় হবে ২ হাজার ২১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এটি রয়েছে চুক্তি স্বাক্ষর পরবর্তী শর্ত প্রতিপালনাধীন পর্যায়ে। গাবতলী-সাভার-নবীনগর সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের ব্যয় হবে ২ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা, এটির বিস্তারিত সমীক্ষা চলমান। কক্সবাজারে সমন্বিত পর্যটন গ্রাম তৈরির জন্য ব্যয় হবে ৮৫০ কোটি টাকা,এটি চুক্তি স্বাক্ষর পর্যায়ে রয়েছে।  খুলনা খানজাহান আলী বিমানবন্দরের উন্নয়নে ব্যয় হবে ২ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা, প্রকল্পটি বিস্তারিত সমীক্ষা পর্যায়ে রয়েছে।

তালিকায় রয়েছে, ঝিলমিল আবাসিক এলাকায় নি¤œ ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য সুউচ্চ আবাসিক ভবন নির্মাণ, পূর্বাচল নতুন শহরে পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সুউচ্চ আবাসিক ভবন নির্মাণ, চট্টগ্রামের নাসিরাবাদে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন আবাসিক ভবন নির্মাণ এবং সিলেটে পাঁচ তারকা মানের হোটেল ও পর্যটন কমপ্লেক্স তৈরি প্রকল্প। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের পরিচালন ও ব্যবস্থাপনা, ধীরাশ্রম রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন একটি নতুন কন্টেইনার ডিপো তৈরি, চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ ও আধুনিক রেলওয়ে হাসপাতাল নির্মাণ, নারায়ণগঞ্জ শহরে লাইট র‌্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেম চালুকরণ প্রকল্পসহ ইত্যাদি।

জানা গেছে, মেট্রোরেল লাইন-২ হলো ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ। ২০৩০ সালের মধ্যে গাবতলী থেকে চট্টগ্রাম রোড পর্যন্ত উড়াল ও পাতাল সমন্বয়ে প্রায় ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সরকার টু সরকার (জিটুজি) ভিত্তিতে সরকার বেসরকারী অংশীদারিত্বে (পিপিপি) এই লাইনটি নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। আর এ জন্য জাপান ও বাাংলাদেশ সরকার সহযোগীতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। ইতিমধ্যে বাস্তবায়নের জন্য বেসিক স্ট্যাডির কাজ চলছে। আগামী অর্থবছরে সূচনাতে প্রিলিমিনারী ষ্ট্যাডির কাজ শুরু হবে। এই লাইন বাস্তবায়নে সার্বিকভাবে গড় ব্যয় হবে ১ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা। 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সমীক্ষার তথ্য বলছে, বর্তমানে পিপিপি'র মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য ১০টি খাতে বর্তমানে ৭৮টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে। এ সকল প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে আনুমানিক ৩৬.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হবে। ইতোমধ্যে ১৭টি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বেসরকারি অংশীদারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। যার প্রকল্প মূল্য ৪.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ ছাড়া দরপত্র প্রক্রিয়াধীন ১৯টি প্রকল্প এবং সম্ভাব্যতা যাচাই পর্যায়ে ২২টি প্রকল্প রয়েছে। 

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ব্যক্তি ও বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে পিপিপি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা একটি বড় বাধা। অন্যদিকে জমি অধিগ্রহণ করতে দীর্ঘ সময় লেগে যায় এবং নানা জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। অন্তত ৮০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের পর পিপিপি চুক্তি করা উচিত।

সোনালীনিউজ/এম

Wordbridge School
Link copied!