• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণ

রাজউকের তদন্ত প্রতিবেদনে ৫ সুপারিশ


লাইজুল ইসলাম মার্চ ১৫, ২০২৩, ০৯:৪৩ পিএম
রাজউকের তদন্ত প্রতিবেদনে ৫ সুপারিশ

ঢাকা: রাজধানীর সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় রাজউক কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। ঝুঁকিমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সিদ্দিক বাজারের সামনের সম্পূর্ণ সড়ক খুলে দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন রাজউকের তদন্ত কমিটির প্রধান প্রকৌশলী সামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘ভবনটি ঝুঁকিমুক্ত কিনা এ বিষয়ে জানতে অন্তত ৪৫ দিন সময় প্রয়োজন। তাই আপাতত ভোর ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ভবনটির সামনের সড়কের বিপরীত লেন দিয়ে হালকা যানবাহন চলতে দেওয়া হবে। বন্ধ থাকবে ভবনের সামনের লেন। ভারী যান চলতে দেওয়া হবে না। কারণ, এতে বেশি কম্পন হয়ে আরও বেশি ঝুঁকিতে পড়তে পারে ভবনটি।’

এছাড়া তদন্ত কমিটি পাঁচ দফা সুপারিশ করেছে বলেও জানান তিনি। সুপারিশ গুলো হলো-

১. ভবনটিতে প্রপিং করতে হবে। এর যে কলামগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলোকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য প্রপিং করা। এটি ইতোমধ্যে হয়ে গেছে।

২. ভবনটির সামনের সড়কের ২৫/২৬ ফিট বাদ দিয়ে একাংশ দিয়ে যান চলাচল করতে পারবে। তবে, রাতে রাস্তাটি পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। বিপরীত লেন দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে। ভারী কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারবে না।

৩. ৪৫ দিনের মধ্যে মালিকপক্ষকে বিশেষজ্ঞ কোনো থার্ড পার্টি দিয়ে ডিটেইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাসেসমেন্ট (ডিইএ) করতে হবে। থার্ড পার্টির ডিইএ রিপোর্টে যে ডিজাইন আসবে সেই ডিজাইন অনুযায়ী রেট্রোফিটিংয়ের কাজ করতে হবে ১৮০ দিনের মধ্যে।

৪. ডিইএ ও রেট্রোফিটিং— এ দুই কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভবনটি বসবাস বা ব্যবহারের উপযোগী হবে না।

৫. সুপারিশের ভিত্তিতে কাজগুলো শেষ করা গেলে আমরা একটা সার্টিফিকেট দেব। এটা দেওয়ার পরই কেবল ভবনটি ব্যবহার করা যাবে।

এদিকে, বিধ্বস্ত হওয়া ভবনের সামনের সড়ক খুলে দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ পর রাস্তাটি খুলে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে এ এলাকার যানজটের পাশাপাশি কমেছে জনভোগান্তি। একইসঙ্গে ভবনটির ৯টি পিলারে ১৮টি স্টিলের পাইপ জুড়ে দিয়ে সাপোর্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বুধবার (১৫ মার্চ) সরেজমিনে দেখা যায়, সিদ্দিকবাজারে ভবন বিধ্বস্ত হওয়ায় পর থেকে সদরঘাট থেকে গুলিস্তান যাতায়াতের প্রধান সড়ক সকাল থেকে হালকা যানবাহনের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ভবনের সামনের ১৮ ফিট জায়গা ব্যারিকেড দিয়ে বাকি অংশ খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যানজট ও জনভোগান্তি কমেছে।

গত সাত দিন আলুবাজার মোড় থেকে গাড়ির ডাইভারশন করায় বংশাল, ইংলিশ রোড, নয়াবাজার হয়ে কদমতলী মোড়, গুলিস্তানের গোলাপশাহ মাজার, স্টেডিয়াম, জিরো পয়েন্ট, পুরানা পল্টন মোড় হয়ে বিজয়নগর পর্যন্ত এসব এলাকায় তীব্র যানজট ছিল। রাস্তা খুলে দেওয়ায় আজ আর সে যানজট দেখা যায়নি।  

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ভয়াবহ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ক্যাফে কুইন স্যানিটারি মার্কেট ভবন। ওই ভবনের তৃতীয় তলা পর্যন্ত ভেতরের অংশের ছাদ ধসে পড়ে, নিচ তলা থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত দেয়ালও ধসে পড়ে। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভবনটির বেজমেন্ট। ভবনটি দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে হালকা হেলে গেছে। পাশের ব্র্যাক ব্যাংক ভবনের নিচতলার এক পাশের দেয়াল আর দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ তলা পর্যন্ত সামনের দেয়াল ধসে পড়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সিদ্দিকবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় তদন্তের স্বার্থে অস্থায়ীভাবে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। ওই ভবনের সামনে দিয়ে যাওয়া আসা লোকজন আগ্রহ নিয়ে ভবনটি দেখছেন। চারদিন হয়ে গেলেও ভবন দেখার জন্য উৎসুক জনতার ভিড় কমছে না। ভয়াবহ বিস্ফোরণের সাক্ষী হয়ে দণ্ডায়মান রয়েছে ভবনটি। আপাতত ভবনটি স্থিতিশীল রাখতে রাজউক স্টিলের পাইপ বসালেও সেটি ভাঙা হবে নাকি সংস্কার হবে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে চলছে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব।

সোনালীনিউজ/এলআই/আইএ

Wordbridge School
Link copied!