• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

নেতৃত্বের বিবাদে পুড়ছে গণফোরাম


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ২৩, ২০২০, ০৯:৩৬ পিএম
নেতৃত্বের বিবাদে পুড়ছে গণফোরাম

ঢাকা  : দলের নেতৃত্ব নিয়ে দিনে দিনে বিভেদ বাড়ছে ড. কামাল হোসেনের দল গণফোরামে।

সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসা দলটির দুইটি গ্রুপের দ্বন্দ্ব আরও জটিল হয়ে উঠেছে। মাঠের রাজনীতি থেকে ভোটের রাজনীতিতে বেশি সরব থাকা গণফোরামের একাংশ থেকে এবার সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে বহিষ্কারের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।

কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র বিরোধী কর্মকান্ডর অভিযোগ তুলে এই হুশিয়ারি দেন তারই দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযোদ্ধা গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি ও মুখপাত্র সুব্রত চৌধুরী।

তবে বহিষ্কারের আগে তাকে শোকজ দেয়ার কথা জানিয়ে সুব্রত চৌধুরী এও বলেছেন, শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হলে চূড়ান্ত বহিষ্কার করা হতে পারে। গত বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গণফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে সুব্রত একথা বলেন।

গণফোরামের এমন পরিস্থিতির শুরু গতবছরের এপ্রিলের শেষ দিকে। গত বছরের ২৬ এপ্রিল গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে। সেই কাউন্সিলে কামাল হোসেন সভাপতি ও রেজা কিবরিয়া সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

এরপর চলতি বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণফোরামের নেতাকর্মীদের বর্ধিত সভা করে ২৬ ডিসেম্বের গণফোরামের কাউন্সিল অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু। তার নেতৃত্বে ওই সভায় ২১০ সদস্যের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিও গঠন করা হয়।

ওই সভা থেকে দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে রেজা কিবরিয়া, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মহসিন রশিদ, আওম শফিক উল্লাহ ও মোশতাক আহমেদকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। এরপরে মোস্তফা মহসিন মন্টুদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আসে।

গত ১৭ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে মোস্তফা মহসিন মন্টু, আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী ও জগলুল হায়দার আফ্রিককে দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয় কামালপন্থিরা। এই অংশটি ১২ ডিসেম্বর জাতীয় সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করে।

সুব্রত চৌধুরী বলেন, আগামী সম্মেলনে যদি কামাল হোসেন আসেন তবে তাকে সঙ্গে নিয়ে আমরা গণফোরামকে সামনে দিকে এগিয়ে নেবো। এই সিদ্ধান্ত ড. কামাল হোসেনের। তবে উনি ড. রেজা কিবরিয়াকে নিয়ে এবং উনার আশীর্বাদ তুষ্ট হয়ে যদি দুষ্ট চক্রের মাধ্যমে গণতন্ত্রহীন এবং স্বেচ্ছাচারিতামূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যান তাহলে আমাদের সিদ্ধান্ত, সম্মেলন এর আগেও হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, গঠনতন্ত্রবিরোধী যত কর্মকান্ডকে হয়েছে তা উনার (ড. কামাল হোসেন) সম্মতিক্রমেই হয়েছে।

সুতরাং উনি সভাপতি হোক আর সদস্যই হোক উনি যদি গঠনতন্ত্রবিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকেন, তার ব্যাপারে যা ব্যবস্থা নিতে হয় তা আমাদের গঠনতন্ত্রে আছে।

কেন্দ্রীয় কমিটির দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সম্মতিক্রমে তাকে বহিষ্কার করা যায়। তার আগে শোকজ দিতে হয়। আমরা ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করব না, প্রয়োজনে তার আগেও যারা গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজ করেছে তাদের শোকজ করব। কামাল হোসেনের ব্যাপারেও এটার কোন ব্যত্যয় হবে না।

সুব্রত চৌধুরী বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা যদি শোকজে সন্তুষ্ট না হয় তাহলে বহিষ্কারটা কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় করতে হবে। দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের অনুমতি নিয়ে। যদি সদস্যরা সন্তুষ্ট হয় তাহলে চূড়ান্ত বহিষ্কার হয় না, সেটা প্রত্যাহার হয়।

যদি দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য মনে করে শোকজের জবাব সন্তুষ্ট নয়, তাহলে চূড়ান্ত বহিষ্কার করা যাবে।

ড. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বলেছিলাম ২৬ ডিসেম্বর, কিন্তু যেহেতু উনি এখনও ড. রেজা কিবরিয়ার যোগসাজশে গঠনতন্ত্র বিরোধী কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন তাই সিদ্ধান্ত আগেও হতে পারে। আমরা দেখব আগামীকাল থেকে উনি কি ভূমিকা রাখেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!