• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
পুলিশের লাঠিচার্জ জলকামান ব্যবহার

স্বপ্নভঙ্গের হতাশা, ফ্রান্সে বিক্ষোভ ভাঙচুর


ক্রীড়া ডেস্ক ডিসেম্বর ২০, ২০২২, ১০:৩৫ এএম
স্বপ্নভঙ্গের হতাশা, ফ্রান্সে বিক্ষোভ ভাঙচুর

ঢাকা : উচ্ছ্বাস, অন্যদিকে স্বপ্নভঙ্গের হতাশা। বিশ্বকাপ ফাইনালের পর আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আয়ার্সে যখন লাখো মানুষ জয়ধ্বনি করছে, তখন প্যারিসের রাস্তায় রীতিমতো লঙ্কাকাণ্ড।

ফাইনালে হারার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে ফরাসি সমর্থকরা। শুরু করে ভাঙচুর। পটকা ফাটিয়ে এক ধরনের ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে। এতে রীতিমতো দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরি হয়।

উগ্র এই সমর্থকদের সামাল দিতে দ্রুত রাস্তায় নামে দাঙ্গা পুলিশ। জলকামান ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী আটক হয়। শুধু প্যারিস নয়, ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরেও একই চিত্র দেখা যায়। হারের পর প্যারিস ছাড়াও নিসে, লিয়ঁর মতো শহর অশান্ত হয়ে ওঠে।

সামাজিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বেশ কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছে সমর্থকরা। চালাচ্ছে ভাঙচুর। পরিস্থিতি সামাল দিতে জলকামান ব্যবহার ও লাঠিচার্জ করছে পুলিশ। আরেক ভিডিওতে ফ্রান্সের রাস্তায় হট্টগোল এবং বিশৃঙ্খলার দৃশ্য দেখা যায়। পুলিশ সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার চেষ্টা করছে। আর উগ্র সমর্থকরা পুলিশকে উপেক্ষা করেই ভাঙচুরের চেষ্টা করছে। এক পর্যায় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। অন্য এক ভিডিওতে দেখা যায় পুলিশ অফিসারদের লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়ছে বিক্ষোভকারীরা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাইনালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে নাটকীয় ৪-২ গোলে পেনাল্টি শুটআউটে আর্জেন্টিনা জয়লাভ করার পর ফ্রান্সের উগ্র সমর্থকরা বিক্ষোভ ও ভাঙচুর শুরু করে। একজন টুইটার ব্যবহারকারীকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘লিও শহরে এক নারী উচ্ছৃঙ্খল সমর্থকদের পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় তিনি আক্রমণের শিকার হন।’

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়, প্যারিসের রাস্তায় বিশৃঙ্খলার সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। আরেক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সানের প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্রান্সের রাজধানীতে বিখ্যাত চ্যাম্পস-এলিসিস-এ ফুটবলভক্তদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দাঙ্গা পুলিশ। কারণ উত্তেজনাপূর্ণ খেলায় পরাজয়ের পর ভক্তরা সেখানে আগুন জ্বালায় এবং আকাশের দিকে আতশবাজি নিক্ষেপ করে।

ইন্ডিয়া টুডে জানায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা বেশ কিছু ভিডিওতে দেখা যায় প্যারিস ও লিওর রাস্তায় বিশৃঙ্খলার দৃশ্য। আর পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেলের মুখে অনেকে পালিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকে পুলিশের দিকে ঢিল, বোতল এবং আতশবাজি নিক্ষেপ করছে।

উলটো দৃশ্য আর্জেন্টিনায় : ফ্রান্সে যখন এই ঘটনা, তখন আর্জেন্টিনায় উলটো দৃশ্য। বুয়েনস আয়ার্সের প্রাণকেন্দ্রে লাখো সমর্থক জড়ো হয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে থাকেন। গাড়ির হর্ন বাজিয়ে, বাজি ফাটিয়ে জয় উদযাপন করেন তারা। জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে, নীল-সাদা জার্সি পরে চলে নাচ-গান।

শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ওবলিস্কো সৌধের সামনেই সব থেকে বড় জমায়েতটা হয়েছিল। সেখানেই খেলা দেখেন হাজার হাজার মানুষ। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে দেশের জয় আসতেই শুরু হয়ে যায় সেলিব্রেশন।

এই মুহূর্তে আর্থিকভাবে খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি। দেশের সব থেকে বড় সমস্যা এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি। পাশাপাশি আর্জেন্টিনার মুদ্রারও অবমূল্যায়ন ঘটেছে। কমেছে মানুষের আয়। সাড়ে চার কোটি জনসংখ্যার দেশটির চল্লিশ শতাংশ মানুষই দরিদ্র। কিন্তু ফ্রান্সের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ জয় আর্জেন্টিনার মানুষের সেসব হতাশা দূর করে দিয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!