• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

অনুমোদন ছাড়াই ইটভাটা, অভিযোগ করেও প্রতিকার পায়নি কৃষক


লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানুয়ারি ১৫, ২০২০, ০৭:৪৯ পিএম
অনুমোদন ছাড়াই ইটভাটা, অভিযোগ করেও প্রতিকার পায়নি কৃষক

লালমনিরহাট: অনুমোদন ছাড়াই লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় ফসলি জমিতে গড়ে উঠছে ইটভাটা। কৃষকরা এ ভাটা বন্ধ করতে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেও পায়নি কোনো প্রতিকার।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে,আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের নামুড়ি চন্দ্রপুর গ্রামের বারবিষার দোলায় বছরে তিনটি বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করেন গ্রামের কয়েকশ কৃষক পরিবার। কৃষকদের চাষাবাদে সেচ সুবিধা দিতে বারবিষার দোলায় একাধিক সেচ পাম্প স্থাপন করেছে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

প্রতিবছর তিনটি ফসল ঘরে তুলে বেশ সুখেই ছিলেন কৃষকরা। হঠাৎ চলতি মাসে সেই বারবিষার দোলার নামুড়ি চন্দ্রপুর গ্রামে জনৈক সালামের এক একর জমি চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে একটি ইটভাটা নির্মাণের কাজ শুরু করেন লালমনিরহাট শহরের নামাটারী এলাকার ইট ব্যবসায়ী এন্তাজ আলী। পার্শ্ববর্তী জমির মালিকদের না জানিয়ে কৃষকদের জমির ওপর ভাটার মাটি ফেলে স্তুপ করে রেখেছে।

ফলে এসব কৃষক চলতি ইরি-বোরো ধান চাষাবাদ করতে পারছেন না। ফসলি জমির ওপর ইটভাটা নির্মাণের প্রতিবাদ এবং ভাটাটি বন্ধ করতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে স্থানীয় কৃষকরা লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে দুইটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ দায়েরের সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও কোনো সুফল না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষিরা। অপরদিকে ভাটার নির্মাণকাজ চলমান থাকায় চলতি ইরি-বোরো চাষাবাদসহ আগামী দিনে ভাল ফসল পাওয়া নিয়েও শঙ্কায় রয়েছে তারা।

এ বিষয়ে জানতে পশ্চিম ভেলাবাড়ি গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম মিঠু বলেন, বারবিষার দোলার জমি দিয়েই আমাদের পুরো পরিবারের সংসার চলে। ভাটার পাশেই ৬০ বিঘা জমিতে বছরে তিনটি ফসলের চাষ হয়। ইরি-বোরোতে প্রতি শতাংশে এক মণের বেশি ধান ফলে। এমন জমিতে ইটভাটা করায় আগামীতে ফসলহানির আশঙ্কা করে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি। ভাটা মালিক কোনো কর্ণপাত না করেই চালিয়ে যাচ্ছে নির্মাণকাজ।

জেলা প্রশাসককে দেওয়া অভিযোগপত্র নামুড়ি চন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক সোবহান আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন ফসলি জমি নষ্ট করে কোনো কারখানা গড়ে তোলা যাবে না। আমাদের ফসলি জমির ওপর ইটভাটা হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে সরকারি বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না।

এদিকে ভাটা মালিক এন্তাজ আলী বলেন, সবেমাত্র ভাটা নির্মাণ করা হচ্ছে। আগুন দেওয়ার আগে পরিবেশ অধিদফতরসহ সব বিভাগের অনুমোদন নেওয়া হবে। তবে অনুমতি না নিয়ে ভাটায় আগুন জালানোর সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার প্রশ্নে কোনো সদত্তোর দিতে পারেন নি।

আদিতমারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আলীনুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ফসলি জমির ওপর ইটভাটার অনুমোদন দেওয়া হয় না। তারা অনুমোদনের জন্য এলে সেটি তদন্ত করে ফলাফল যদি ফসলি জমির ওপর প্রভাব পড়ে তাহলে তাদেরকে অনুমোদন দেওয়া হবে না।

এবিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, ফসলি জমি নষ্ট করে শিল্পকারখানা গড়ে তোলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আছে। ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মাণের বিষয়ে কৃষকদের অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোনালীনিউজ/এসএ/এসআই

Wordbridge School
Link copied!