কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার সুখিয়া ইউনিয়নের চর পলাশ গ্রামের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে শনিবার সকাল ৮টা বাজার আগেই কয়েক সহস্র নারী-পুরুষ হাজির সেখানে।
কারণ এখানে কাঠুরিয়া কবিরাজ আসবেন। তার জন্য মঞ্চও প্রস্তুত। তিনি পানি ও তেলে ফু দিবেন। তার ফু দেওয়া পানি খেলে এবং তেল মালিশ করলে সব রোগবালাই থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। মনোবাসনাও পূরণ হবে।
এ বিশ্বাসে দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ হাজির সকাল হতেই।
তিন ঘণ্টা পর ১১টার দিকে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার রাজ্য ইউনিয়নের পাইলাবর গ্রামের কাঠুরিয়া কবিরাজ আসলেন।
তিনি সবার উদ্দেশে বলেন, 'আমি মাইকে ফু দেব, আর মাইকে আমার ফুয়ের আওয়াজ যে পর্যন্ত যাবে, সে পর্যন্ত তেল-পানির বোতলে ফু কাজ করবে'।
এরপর কাঠুরিয়া কবিরাজ মাইকে ফু দিলেন। আর চারপাশে অবস্থান নেয়া হাজার হাজার নারী-পুরুষ তেল-পানির বোতল উঁচিয়ে ধরলেন।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি জানতে পেরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দ্রুত আয়োজন শেষ করে চলে যায় তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সবুজ মিয়া নামের ওই কবিরাজ ভালুকা উপজেলার রাজ্য ইউনিয়নের পায়লাবের গ্রামের অধিবাসী। তিনি বনে কাঠ কেটে জীবিকার্জন করেন। সপ্তাহে চারদিন কাঠ কাটেন এবং তিনদিন কবিরাজি করে থাকেন।
জানতে চাইলে পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেণু বলেন, কিছু ভক্তের অনুরোধে এখানে কাঠুরিয়া কবিরাজ উপস্থিত হয়েছেন। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এখানে এসেছি আমি।
পাকুন্দিয়া থানা পুলিশের ওসি মো. মফিজুর রহমান বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখে দ্রুততম সময়ে এ আয়োজন শেষ করা হয়েছে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হয়নি।
এ ব্যাপারে দেশের সর্ববৃহৎ শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের সাবেক ইমাম কিশোরগঞ্জ শহরের বড়বাজার জামে মসজিদের খতিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের গবেষক মুফতি মাওলানা এ কে এম সাইফুল্লাহ বলেন, এভাবে মাইকে ফুঁ দেয়া প্রতারণা ও শিরকের শামিল।
সোনালীনিউজ/এএস
আপনার মতামত লিখুন :