• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

কুষ্টিয়ায় দুই ফার্মেসী মালিককে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা


কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানুয়ারি ১৭, ২০১৯, ১২:৫৯ পিএম
কুষ্টিয়ায় দুই ফার্মেসী মালিককে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা

কুষ্টিয়া: জেলায় ঔষধ ফার্মেসীতে অভিযান চালিয়ে সিনামিন ও ট্যাপেন্টা ট্যাবলেটসহ ৩জনকে আটক করেছে পুলিশ। পরে তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক দুইটি ঔষধের দোকানে অভিযান চালিয়ে প্রেসক্রিপশন ছাড়া ঔষধ বিক্রয়ের সত্যতা পাওয়ায় দুই ফার্মেসীর মালিককে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।

বুধবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে এই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মুছাব্বিরুল ইসলাম।

এসময় তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের অভিযানে হাসপাতাল মোড়সহ কয়েকটি ফার্মেসী থেকে ট্যাপেন্টা ট্যাবলেটসহ ৩জনকে আটক করে। তারা কোন দোকান থেকে ওষধ কিনেছে এমন তথ্য নিয়ে আমরা আজ (বুধবার দুপুরে) শহরের হাসপাতাল মোড়ের রাসেল ফার্মেসী ও সার্কিট হাউসের সামনে মায়া ফার্মেসীতে অভিযান চালায়। এসময় প্রেসক্রিপশন বিহীন টাপেন্টা নামক ট্যাবেলট বিক্রি করার অপরাধে ড্রাগ এক্ট ১৯৪০ ধারা (১৮) ধারা মোতাবেক মায়া ফার্মেসীকে ৫০ হাজার ও রাসেল ফার্মেসীকে ২০হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।

কুষ্টিয়ার ড্রাগ সুপার মোহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমান বলেন, ফার্মেসীতে প্রেসক্রিপশন বিহীন অন্তত ৪০টি ধরনের কোন ঔষধ বিক্রয় করতে পারবে না। এমন নির্দেশ অমান্য করে কুষ্টিয়ার ফার্মেসীগুলোতে অহরহ এসব বিক্রি করে আসছিলো।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন বলেন, কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাতের নির্দেশে সম্প্রতি সময়ে মাদকের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানের কারনে কুষ্টিয়া সহ পাশ্ববর্তী অঞ্চলে মাদক প্রায় নির্মূলের পথে। ফলে মাদকসেবীরা মাদকের পরিবর্তে চেতনানাশক ঔষধের দিকে ঝুকে পড়েছে। যার ফলশ্রুতিতে কুষ্টিয়ায় বিভিন্ন ঔষধের দোকানে অভিযান চালিয়ে কাশির সিরাপ সিনামিন ও ট্যাপেন্টা ট্যাবলেটসহ তাদেরকে আটক করি।

প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়ায় মাদক নেশায় যোগ হয়েছে চেতনানাশক ট্যাবলেট, প্রেসক্রিপশন ছাড়া মিলছে ঘুমের ঔষধ। কুষ্টিয়া শহর সহ গ্রামের অলিতে গলিতে ফার্মেসী গুলোতে চলছে প্রেসক্রিপশন ছাড়া ঘুমের ঔষধ বিক্রির রমরমা ব্যবসা। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ঔষধ বিক্রির অন্তরালে নেশাজাতীয় ইনজেকশন ও ঘুমের ট্যাবলেট বিক্রয় করছে অধিক মুনাফা লাভের আশায়। ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিল, গাঁজার পাশাপাশি এবার নেশার রাজ্যে যুক্ত হয়েছে ঘুমের ট্যাবলেট।

বিভিন্ন ধরণের ঘুমের ট্যাবলেট মাদক সেবীদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নেশার ক্ষেত্রে।আইন শৃঙ্খলাবাহিনী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স ঘোষনার পর থেকে মাদক সেবীরা মাদকের বিকল্প হিসেবে ঝুঁকে পড়েছে বিভিন্ন কোম্পানীর ঘুমের ট্যাবলেটের উপরে। হাত বাড়ালেই ঔষুধের ফার্মেসী গুলোতে অনায়াসে মিলছে ঘুমের ট্যাবলেট। এগুলো এখন উঠতি বয়স্ক তরুন-তরুনীদের মাঝে আকর্ষনীয় আসক্তির বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাত বাড়ার সাথে সাথে কুষ্টিয়ার ফার্মেসীগুলোর সামনে উঠতি বয়স্ক তরুনদের আনাগোনা বাড়তে থাকে।

এইসব ঘুমের ঔষধ গুরুতর অসুস্থ্য, দুর্ঘটনার আহত ও দুশ্চিন্তাগ্রস্থ লোকজনের ঘুমের জন্য ডাক্তারের পরামর্শে ব্যবহার করা হয়। এইসব ঔষধ ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া বিক্রি নিষিদ্ধ হলেও অতি মুনাফার আশায় বিক্রি করছে কিছু অসাধু ঔষধ ব্যবসায়ীরা। আর সুযোগ নিচ্ছে মাদকসেবীরা।

বিপথগামী স্কুল পড়ুয়া ছাত্র থেকে শুরু করে কলেজ পড়ুয়া তরুণ সমাজ আজ ধ্বংসের মুখে পতিত হচ্ছে মাদকরুপী ঘুমের ঔষধের কারনে। প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসি গুলোতে এমন অবাধ উত্তেজক ট্যাবলেট ও সিরাপ বিক্রি হওয়ায় সচেতন মহল ও অভিভাবকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!