• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমার সফরে পোপ কি ‘রোহিঙ্গা’ বলবেন?


আন্তর্জাতিক ডেস্ক নভেম্বর ২৭, ২০১৭, ০৯:৫৫ এএম
মিয়ানমার সফরে পোপ কি ‘রোহিঙ্গা’ বলবেন?

ফাইল ছবি

ঢাকা: জাতিগত নিধনের এক জটিল এক মুহূর্তে মিয়ানমার সফরে যাচ্ছেন ক্যাথলিক চার্চপ্রধান পোপ ফ্রান্সিস। সোমবার (২৭ নভেম্বর) এই ধর্মগুরুর দেশটির রাজধানী নেপিদোতে পৌঁছার কথা রয়েছে। তাই এই সফরে রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী ও উগ্রো বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নীপিড়নের শিকার মুসলিম জনগোষ্ঠি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেখা করার কথা আছে। 

তবে এই সফরে পোপ যেন ‘রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা’র খাতিরে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার না করেন, সে জন্য তাকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে দেশটির খ্রিস্টান ধর্মের পক্ষ থেকে। যদি এর আগে পোপ ‘রোহিঙ্গা ভাইবোন’ শব্দটি ব্যবহার করে তাদের প্রতি সহমর্মিতার কথা উল্লেখ করেছিলেন। ফলে এখন দেখার বিষয়, পোপ তার এ সফরের সময় ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করেন কি না?

এর আগেও রাখাইনের সহিংসতা নিরসনে মিয়ানমার সরকার গঠিত কমিশনের প্রধান ও জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান ও মিয়ানমারের কার্ডিনাল চার্লস মং বো পোপ তার সফরের সময় যেন ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার না করেন, তার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন। খ্রিস্টানরাও মিয়ানমারে সংখ্যালঘু। যদিও এর বিরোধিতা করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা, যারা এরই মধ্যে ‘বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত এই দেশহীন জনগোষ্ঠীকে’ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ‘রোহিঙ্গা’ বলেই অভিহিত করে আসছে।  

চলতি বছরের অক্টোবরে রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সহিংসতা সৃষ্টির পর সেখান থেকে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধনের ধ্রুপদি উদাহরণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে জাতিসংঘ। বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ মিয়ানমার ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি পরিহার করার পাশাপাশি এই জনগোষ্ঠীকে নিজেদের দেশের নাগরিক বা স্বতন্ত্র নৃগোষ্ঠী বলেও স্বীকৃতি দিতে রাজি নয়। তারা এই মুসলিম জনগোষ্ঠীকে ‘বাঙালি’ বলে অভিহিত করে থাকে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পোপ ফ্রান্সিস মিয়ানমার সফরে শেষে বাংলাদেশে আসবেন। আগামী ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি ঢাকায় অবস্থান করবেন।

ভ্যাটিকান থেকে জানানো হয়েছে, পোপের এই সফর মিয়ানমার থেকে ‘জাতিগত নিধনের’ শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন, সংকট নিরসনে আলোচনা এবং আন্তর্জাতিক উদ্যোগগুলোকে বেগবান করার কাজকে উৎসাহিত করবে। মিয়ানমার সফরকালে পোপ দেশটির নেত্রী অং সান সু চি এবং সেনাপ্রধান অং মিন হ্লাইয়েংর সঙ্গে বৈঠক করবেন।

মিয়ানমারের পাঁচ কোটি ৩০ লাখ মানুষের মধ্যে ক্যাথলিকের সংখ্যা ছয় লাখ ৬০ হাজার। পোপ সেখানে ইয়াঙ্গুন শহরে এক উন্মুক্ত সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া তিনি বৌদ্ধ নেতাদের সঙ্গেও দেখা করবেন।

মিয়ানমারে সফর শেষে বাংলাদেশে এসে পোপ এখানকার রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবেন। বাংলাদেশের সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে এ ধর্মের অনুসারী তিন লাখ ৭৫ হাজার। ঢাকায় রোহিঙ্গাদের একটি ছোট প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পোপের দেখা করার কথা রয়েছে বলেও বিবিসির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) এক তথ্যমতে, গত ২৫ অক্টোবর রাখাইন রাজ্যে ৩০টি পুলিশ ও সেনাক্যাম্পে হামলার পর সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা মাতৃভূমি ছাড়তে বাধ্য হয়। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!