• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইসিতে ৫ স্তরে সংস্কার আসছে


বিশেষ প্রতিনিধি মার্চ ২০, ২০১৭, ০২:৫৪ পিএম
ইসিতে ৫ স্তরে সংস্কার আসছে

ঢাকা: নির্বাচনকেন্দ্রিক অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি স্তরে সংস্কার আনছে নির্বাচন কমিশন। সংস্কারের মধ্যে রয়েছে ইসির নিয়োগ বিধি সংশোধন, সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্বিন্যাস, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মামলা ও পদোন্নতিজট কমানো এবং বিভিন্ন নির্বাচনী মামলা নিষ্পত্তি। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী রোডম্যাপের পাশাপাশি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যেই এমন সংস্কারের পথে হাঁটছে প্রতিষ্ঠানটি।

ইতোমধ্যেই ইসি সংস্কারের একটি খসড়াও তৈরি করেছে বলে ইসি সচিবালয় সূত্র জানিয়েছে। সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ও সচিবালয়-সংক্রান্ত প্রস্তাবনা দুটি কমিশন সভায় এক সঙ্গে উত্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। তারা বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কমিশন সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ে সংস্কারমূলক কার্যক্রম ইসির কাজে ভারসাম্য আনতে সহায়ক হবে।

কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেসুর রহমারের নেতৃত্বে এ সংস্কার প্রস্তাবনাটি প্রস্তুত হচ্ছে। তবে প্রস্তাবনার বিষয়ে জানতে চাইলে কমিশনের অতিরিক্ত সচিব প্রসঙ্গটি এড়িয়ে গেলেও নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় শাখার সহকারী সচিব রাজিব হাসান খবরের সত্যতা স্বীকার করেন।

তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ’ এ সংক্রান্ত কর্মপন্থার খসড়া পর্যায়ে রয়েছে। নির্বাচনের রোডম্যাপের সঙ্গে এটিও কমিশন সভায় উত্থাপনের কথা ভাবা হচ্ছে। ইসি সচিবালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলছে কোনো ধরনের প্রণীত নিয়োগ-বিধিমালা ছাড়াই। নেই সাংগঠনিক জনবল-সংক্রান্ত কাঠামো।

এত ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও সময়ে সময়ে বিভিন্ন পদে নিয়োগ থেমে নেই স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের। অধিকাংশই পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) পরীক্ষা বিসিএসে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে নিয়োগ পাচ্ছেন। সেখান থেকে নিয়োগ দেয়া হলেও কোন নিয়োগ বিধির আলোকে এটা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া নিয়োগ বিধি না থাকায় আটকে রয়েছে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদোন্নতি।

এদিকে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও অপরাধের দায়ে বিভাগীয় মামলা অনেকদিন ধরেই রয়েছে, সেগুলোকে দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনী মামলার কারণে অনেকগুলো নির্বাচন মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও তফসিল ঘোষণা করতে পারছে না কমিশন। আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে সেগুলোও দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেবে কমিশন।

জানা যায়,আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনো বাকি প্রায় দুই বছর। কিন্তু নির্ধারিত দেড় বছর আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে কমিশন। আসন্ন জুলাই থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে নির্বাচনের ক্ষণ-গণনা বা কাউন-ডাউন।

সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো বাধা তৈরি না হয়, সে লক্ষ্যে আগেভাগেই প্রস্তুতি নিতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে কমিশন। প্রস্তাবিত নির্বাচনী রোডম্যাপে ২২ এজেন্ডায় ১১২ অনুষঙ্গ অন্তর্ভুক্ত রাখা হয়েছে। এসব কাজ কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাস্তবায়ন করবেন।

রয়েছে নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় কিংবা পদোন্নতি না পাওয়াসহ ইসির অভ্যন্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ। ইসির অভ্যন্তরীণ সংস্কারে অসন্তোষ ও ক্ষোভের উপশম ঘটাবে এ সংস্কারমূলক পদক্ষেপগুলো বলে জানিয়েছেন ইসি সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়া আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন ছাড়া নতুন কমিশনের জন্য রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করাও চ্যালেঞ্জ হবে—এমন ধারণা থেকেই ইসি সচিবালয়ের অভ্যন্তরীণ সংস্কারের কাজটিও দ্রুত নিষ্পত্তি চাইছেন কমিশনাররাও।

সচিবালয়ের সংস্কার প্রস্তাবে যা থাকছে, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাংগঠনিক কাঠামো ও জনবল কাঠামো পুনর্বিন্যাস, নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালায় প্রয়োজনীয় সংস্কার, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি-সংক্রান্ত জট আলোচনার মাধ্যমে নিরসনের উদ্যোগ, ডিজিটাল হাজিরা এবং নির্বাচনের মামলা দ্রুত নিরসন।

উল্লেখ্য, প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করে কমিশন। তবে ইসির অভ্যন্তরীণ সংস্কারে প্রস্তাবনা তৈরি নজির এই প্রথম। কমিশন আশা করছে, এর মাধ্যমে একনজরে ইসি সচিবালয়ের অভ্যন্তরীণ সমস্যা সম্পর্কে তাদের একটা সম্যক ধারণা পাবেন। পাশাপাশি বিরাজমান সংকট সমাধানে প্রস্তাবনাটি কমিশনারদের জন্য সহায়ক হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!