আধুনিক যুগে ডাটা বা তথ্যসম্ভার যেভাবে সংরক্ষণ করা হয় তার পদ্ধতিটাই হয়তো অচিরে আমূল বদলে যাবে। ডাটা স্টোরেজের মাধ্যম হিসেবে প্রচলিত মেমোরি কার্ডের জায়গা নেবে শরীরের ডিএনএ।
অদ্ভুত শোনালেও কথাটা সত্যি, ব্রিটেনে একদল বিজ্ঞানী সম্প্রতি কৃত্রিমভাবে তৈরি ডিএনএ-র স্ট্র্যান্ডে বিপুল তথ্যসম্ভার এনকোড করেছেন সফলভাবে - আর তাদের উদ্ভাবিত সেই কৌশল ডাটা স্টোরেজের পদ্ধতিতে বিপ্লব এনে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা যা করেছিলেন, তা হল প্রায় এক মেগাবাইট পরিমাণ ডাটা রূপান্তর করে ডিএনএ কোডের অ্যালফাবেটের মধ্যে রেখেছিলেন। আর সেই ডাটার মধ্যে ছিল শেক্সপিয়ারের একগুচ্ছ সনেট, মার্টিন লুথার কিংয়ের বিখ্যাত ভাষণ আই হ্যাভ আ ড্রিমের অডিও, একটা ছবি আর একটি গবেষণাপত্র।
তারপর সেটাকে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ল্যাবরেটরিতে ফিজিক্যাল ডিএনএ-তে পরিণত করা হয়। সেই পদার্থটি হিমায়িত করে শুকনো করা অল্প কিছু পাউডার আবার ডাকযোগে ব্রিটেনের বিজ্ঞানীদের কাছে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পাউডার থেকে বিজ্ঞানীরা ভাষণের অডিও বা সনেট উদ্ধার করতে পেরেছেন নিখুঁতভাবে। আর তার ফলেই ডাটা স্টোরেজের মাধ্যম হিসেবে ডিএনএ’র সম্ভাবনা নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছে।
ব্রিটিশ এই গবেষক দলের অন্যতম সদস্য নিক গোল্ডম্যান বিবিসিকে বলছিলেন, এই পদ্ধতিটি খুব নিরাপদ। এতে তথ্য সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে বহু বহুকাল ধরে। বিজ্ঞানীরা পাশাপাশি এটাও অবশ্য স্বীকার করছেন, যেহেতু ল্যাবরেটরিতে ডিএনএ’র মলিকিউলগুলো তৈরি করা খুব ব্যয়সাপেক্ষ তাই অন্তত এই মুহুর্তে ডিএনএতে ডাটা স্টোরেজের খরচটাও অসম্ভব রকমের বেশি।
কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির সুবাদে খরচটা খুব শিগগির নাগালের মধ্যে চলে আসবে বলে আশা করেন বিজ্ঞানীরা।
কিন্তু সত্যিই কি ডিএনএ একদিন ডেটা স্টোরেজের মাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারবে ? ব্যাঙ্গালোরে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সেসে যে মলিকিউলিয়ার বায়োফিজিক্স ইউনিট আছে, তার চেয়ারম্যান ড: দীপঙ্কর চ্যাটার্জি কিন্তু ডিএনএ-র সম্ভাবনা নিয়ে খুবই আশাবাদী।
প্রফেসর চ্যাটার্জি বলেছেন, সঙ্গীতের জগতে ডিএনএ সিকোয়েন্সের ব্যবহার আগেই হয়েছে - এখন ডিজিটাল স্টোরেজেও হতে যাচ্ছে।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন
আপনার মতামত লিখুন :