• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

‘ধরে নিন পৃথিবীর কোনো এক প্রান্তে আছি’


নিউজ ডেস্ক মে ১০, ২০২৪, ০৬:১৫ পিএম
‘ধরে নিন পৃথিবীর কোনো এক প্রান্তে আছি’

ঢাকা: বাংলাদেশের রহস্যময় ব্যক্তিদের তালিকার প্রথমদিকেই যাদের নাম থাকবে তাদের একজন এই আজিজ মোহাম্মদ ভাই। যাকে নিয়ে আছে নানা গল্প, নানা রহস্য। আর এসব গল্পের বেশির ভাগই চলচ্চিত্র জগতের নারী ও হত্যাকেন্দ্রিক। এসব গল্পের কতটুকু সত্য আর কতটুকু মিথ্যা সে নিয়েও আছে নানা মত।

নামের সঙ্গে ‘ভাই’ শব্দটি থাকার কারণে অনেকেই মনে করেন গডফাদার বলেই তাকে ভাই বলা হয়। সাধারণত মাফিয়া ডন বা গডফাদারদের ভাই ডাকে তাদের অনুগতরা। কিন্তু আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের নামে ‘ভাই’ শব্দটি মূলত তাদের বংশের পদবি। তাদের পরিবারের সকলেরই নামের শেষে ভাই পদবি আছে। এমনকি নারীদের নামের সঙ্গেও ভাই আছে। তার পিতার নাম মোহাম্মদ ভাই। মায়ের নাম খাদিজা মোহাম্মদ ভাই।

১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর তাদের পরিবার ভারতের গুজরাট থেকে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান তথা বাংলাদেশে আসে। তাদের পরিবার মূলত পারসিয়ান বংশোদ্ভূত। তারা ‘বাহাইয়ান’ সম্প্রদায়ের লোক। বাহাইয়ানকে সংক্ষেপে ‘বাহাই’ বলা হয়। উপমহাদেশের উচ্চারণে এই ‘বাহাই’ পরবর্তীতে ‘ভাই’ হয়ে যায়।

জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন এই আজিজ মোহাম্মদ ভাই। ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বরে ঘটা ওই হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘ ২৫ বছর পর বৃহস্পতিবার (৯ মে) এ রায় দিয়েছেন আদালত। কিন্তু এই মুহূর্তে দেশে নেই আজিজ মোহাম্মদ। আদলত তার অনুপস্থিতিতেই সাজা দিয়েছেন।

তবে কোথায় আছেন সেই আজিজ মোহাম্মদ! শেয়ারবাজার লুট, খুন, নারী ঘটিত কেলেঙ্কারীসহ নানা কর্মকাণ্ডে জড়িত এক সময়ের ‘ডন’ আজিজ মোহাম্মদ ভাই দেশত্যাগ করেছেন আগেই। তাতে বহু বছর আলোচনায় না থাকলেও সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার রায়ের পর ফের আলোচনায় এসেছে তার নাম। গুঞ্জন রয়েছে, পরিবার নিয়ে আজিজ মোহাম্মদ বাস করছেন থাইল্যান্ডে।

রায়ের পর একটি গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে আজিজ মোহাম্মদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতেই কথা বলেন তিনি।

প্রথমেই সোহেল চৌধুরী হত্যায় নিজের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে আজিজ মোহাম্মদ বলেন, ‘ওই হত্যাকাণ্ডের সময় দেশেই ছিলাম না আমি, সেখানে আমাকে কেন জড়ানো হয়েছে। আদালতের রায়ে ন্যায়বিচার পাইনি আমি। কখনো দেশে ফিরে এলে সত্য প্রতিষ্ঠায় লড়াই চালাবো।’

এখন কোন দেশে আছেন, থাইল্যান্ডে বাস করছেন বলে অনেকেই জানে এমন প্রশ্নের জবাবে আজিজ মোহাম্মদ বলেন, ‘পৃথিবীতে বাস করার মতো অনেক জায়গা আছে। ধরে নিন, পৃথিবীর কোনো এক প্রান্তে আছি। এটা শুধু বলতে পারি। তবে থাইল্যান্ডে নেই। আমি ভালো আছি।’

রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে আজিজ মোহাম্মদ বলেন, ‘ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার আমারও আছে। সুযোগ থাকলে অবশ্যই আপিল করবো। ২৫ বছর আগে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সব মিথ্যা।’

১৯৯৮ সালের দিকে রাজধানীর বনানীর আবদিন টাওয়ারে ‘ট্রাম্পস ক্লাব’ নামে একটি ডিসকো ক্লাব গড়ে উঠেছিল। ক্লাবটির মালিক ছিলেন আজিজ মোহাম্মদের চাচাশ্বশুর বান্টি ইসলাম। ক্লাবের পাশেই থাকা একটি মসজিদের মুসল্লিদের পক্ষ নিয়ে ক্লাবটি বন্ধ করতে গিয়ে আজিজসহ মালিকপক্ষের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান সোহেল চৌধুরী। দ্বন্দ্বের একপর্যায়ে ওই ট্রাম্পস ক্লাবে ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর খুন হন চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী।

তথ্য আছে, পরিবার নিয়ে থাইল্যান্ডে থাকেন আজিজ মোহাম্মদ। দেশে তাদের অলিম্পিক ব্যাটারি, বলপেন, অলিম্পিক ব্রেড ও বিস্কুট, এমবি ফার্মাসিউটিক্যালস, সিনেমা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এমবি ফিল্মসহ বেশ কিছু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মাঝেমধ্যে দেশে এসে এসব ব্যবসা দেখভাল করেন আজিজ মোহাম্মদের স্ত্রী নওরিন ইসলাম।

আইএ

Wordbridge School
Link copied!