• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

তিন ইস্যুতে মাঠে নামছে বিএনপি


বিশেষ প্রতিনিধি নভেম্বর ২৯, ২০১৬, ০১:৪৩ পিএম
তিন ইস্যুতে মাঠে নামছে বিএনপি

নতুন বছরের শুরুতে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, সরকারবিরোধী জনমত তৈরি ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মাঠে নামার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে জানুয়ারিতেই ঢাকায় একটি মহাসমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশের অন্যতম বৃহৎ এই রাজনৈতিক দলটি।

আসন্ন আন্দোলনে নেতৃত্বের অগ্রভাগেই থাকবেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এ সময়ে দেশের কয়েকটি বিভাগীয় শহরেও মহাসমাবেশেও যোগ দেবেন দলটির চেয়ারপারসন। এছাড়া বড় জেলাগুলোয়ও সমাবেশ করা হতে পারে।

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ইস্যু, সরকারবিরোধী জনমত তৈরি ও জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির লক্ষ্যেই রাজপথে নামার পরিকল্পনা করছে দলটি। আর যদি সরকার একতরফা নির্বাচন কমিশন গঠন করে, সেক্ষেত্রে এ ইস্যুতে আন্দোলন জোরদার করা হবে। দেশের বিভিন্ন বিভাগে খালেদা জিয়ার সফরসূচি নিয়ে এরই মধ্যে নীতিনির্ধারকরা নিজেদের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা সম্পন্ন করেছেন। চেয়ারপারসনের পরামর্শ নিয়ে এটি চূড়ান্ত করা হবে।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, দলের অনেকেই আগামী ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে মাঠে নামার পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে সহিংস কোনো পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়, সেদিকে সতর্ক দলটির হাইকমান্ড। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের দিনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো । এবার জ্বালাও-পোড়াও নয়, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির পক্ষেই মত দিচ্ছেন বেশিরভাগ নেতা। 

দলটির এক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, সরকারবিরোধী জনমত তৈরিতে দ্রুতই চেয়ারপারসনের ঢাকার বাইরে সফরে যাওয়ার চিন্তাভাবনা ছিল। কিন্তু নাসিক নির্বাচনের আগে তা সম্ভব হচ্ছে না। এ নির্বাচনকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি।

ডিসেম্বরের শেষদিকে অথবা জানুয়ারির শুরু থেকে বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করার টার্গেট নেয়া হয়েছে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ওইসব সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন। তার সফরসূচি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে। সবার মতামত নিয়ে চেয়ারপারসন সফরসূচি চূড়ান্ত করবেন।

সূত্র জানায়, ডিসেম্বরের শুরুতেই বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করার চিন্তাভাবনা ছিল বিএনপির হাইকমান্ডের। কিন্তু নাসিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও ওই নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্তের পর আগের অবস্থান থেকে সরে আসা হয়। নাসিক নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেয়ায় দলের সিনিয়র নেতারা এ নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন।

নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষেরও নজর থাকবে নাসিক নির্বাচনের দিকে। নির্বাচনের আগে বিভাগীয় সমাবেশ করা হলে গণমাধ্যমও ততটা গুরুত্ব দেবে না। সবদিক বিবেচনা করে সফর পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়।

দলের একজন নীতিনির্ধারক বলেন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনকে টার্গেট করেই তারা মাঠে নামতে চান। আগামী ফেব্রুয়ারিতে নতুন কমিশন গঠন করা হবে। এর আগে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠনে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হবে।

বিভাগীয় সমাবেশের পর ঢাকায় মহাসমাবেশের মাধ্যমে স্বাধীন কমিশন গঠনে সরকারকে আলটিমেটামও দেয়া হতে পারে। সবার মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করা না হলে এ ইস্যুতে আন্দোলন জোরদার করার পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের।

সূত্র আরও জানায়, ডিসেম্বরে ঢাকায় ব্যাপক শোডাউনের চিন্তাভাবনা ছিল বিএনপির। বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ঢাকায় সমাবেশের বিষয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু জানুয়ারিতে ঢাকায় মহাসমাবেশ করার চিন্তাভাবনা থাকায় আপাতত সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসা হয়েছে। তবে বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকায় বিজয় র্যালিও করবে দলটি। সেখানেও ব্যাপক লোক সমাগমের টার্গেট রয়েছে।

সূত্র জানায়, বিগত সরকারবিরোধী দুটি আন্দোলনে ব্যর্থতার পর নেতাকর্মীরা মানসিকভাবে অনেকটা ভেঙে পড়েন। সরকারের মামলা-হামলা ও নির্যাতনে এখনও তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মী এলাকাছাড়া। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন থেকেই নেতাকর্মীদের মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখা প্রয়োজন।

সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি নেতাকর্মীরা মানসিকভাবে উজ্জীবিত হলে তা দলের জন্য ইতিবাচক হবে। খালেদা জিয়া ছাড়া তৃণমূলকে চাঙ্গা করা কঠিন হবে। জেলায় জেলায় সম্ভব না হলেও অন্তত বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমে ওই এলাকার নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করা যাবে। আগামী নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে চেয়ারপারসনের দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও চাঙ্গা করা সম্ভব হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!