দানবাক্সে ২৭ লাখ টাকা

  • বগুড়া প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০১৯, ০৫:৪৬ পিএম

বগুড়া: বগুড়ার হজরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (রহ.) মাজারের আটটি দানবাক্সের টাকা দু'দিন ধরে গণনা করা হলো। সোমবার (১১ নভেম্বর) থেকে দানবাক্সের টাকা গণনা শুরু করে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শেষ করা হয়।

গত তিন মাসে মানুষের দানকৃত টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ৯৭ হাজার ৭৭৭ টাকা। দানবাক্সগুলো থেকে পাওয়া গেছে ১৪টি স্বর্ণের নাক ফুলসহ কিছু স্বর্ণালঙ্কার এবং বৈদেশিক মুদ্রা।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে মাজার কমিটির কোষাধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান বলেন, সোমবার থেকে টাকা গণনা শুরু করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণনা করা শেষ হয়।

মহাস্থান মাজার কমিটির সভাপতি বগুড়া জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাসিম রেজার তত্ত্বাবধানে সোমবার প্রথম পর্যায়ে পাঁচটি দানবাক্স খোলা হয়। অপর তিনটি দানবাক্স মঙ্গলবার খোলা হয়। দুদিন ধরে দানবাক্সের টাকা গণনার কাজ চলে। মহাস্থান উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০ জন শিক্ষার্থীর পাশাপাশি স্থানীয় রূপালী ব্যাংকের ১০ জন কর্মকর্তা টাকা গণনার কাজে অংশ নেন।

মহাস্থান মাজার কমিটি জানায়, মাজারের চারদিকে মোট নয়টি দানবাক্স রয়েছে। এর মধ্যে একটি অকেজো। অন্য আটটি দানবাক্সে মাজার জিয়ারত করতে আসা লোকজনসহ পর্যটক ও দর্শনার্থীরা টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার দেন। মানুষের দানের টাকা মাজার এবং মসজিদের উন্নয়নকাজে ব্যয় করা হয়। দানবাক্সে পাওয়া টাকা বরাবরের মতো এবারও মাজারের পাশেই রূপালী ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছে।

মহাস্থান মাজার কমিটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান বলেন, মাজার কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিন মাস পর পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়। গত জুলাই মাসে দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন দানবাক্সে পাওয়া গিয়েছিল প্রায় ৪২ লাখ টাকা।

আগের তুলনায় এবার টাকার পরিমাণ কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওরস ও অন্যান্য তিথি উপলক্ষে মাজারে জনসমাগম বেশি হলে দানের টাকার পরিমাণ বাড়ে। এ সময়ে যেহেতু মহাস্থানে কোনো উৎসব হয়নি এ কারণে দানের পরিমাণ কিছুটা কম।

জানা যায়, শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য রাজত্ব ছেড়ে প্রায় ৭০০ বছর আগে পুণ্ড্রবর্ধনের রাজধানী পুন্ড্রনগর তথা আজকের বগুড়ার মহাস্থানগড়ে আসেন।

মহাস্থানগড়ে পৌঁছে তিনি ইসলামের দাওয়াত দিতে থাকেন। ধর্ম প্রচার নিয়ে পুন্ড্রবর্ধনের তৎকালীন রাজা পরশুরামের সঙ্গে তার যুদ্ধ হয়। ১৩৪৩ সালে তিনি পরশুরামকে পরাজিত করেন। পরে শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী মৃত্যুবরণ করলে তার মাজার নির্মিত হয়।

প্রতি বছর বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার মাজারে মাহফিল হয়। তার কবর জিয়ারত করলে পুণ্য হবে মনে করে প্রতিদিন দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ এখানে আসেন। মাজারের চারদিকে রাখা দানবাক্সগুলোতে দান করেন তারা।

সোনালীনিউজ/এইচএন