শরণখোলায় ১৭ বছর পর আদুরী নারী থেকে পুরুষ

  • বাগেরহাট প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২০, ০৯:১৪ পিএম

বাগেরহাট: বাগেরহাটের শরণখোলার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের সগির মুন্সি কন্যা আদুরী আক্তারের লিঙ্গ পরিবর্তন হয়ে সে এখন একজন পূর্ণাঙ্গ পুরুষ। আদুরী নাম পরিবর্তন করে সানি ইসলাম রাখা হয়েছে।  সানি ইসলাম ইসামনি পুতুল (১৭) নামের এক মেয়েকে বিয়ে করে দিব্যি সংসার করছেন।  স্ত্রী ইসামনি পুতুল বর্তমানে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।  বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
   
১৯ বছর আগে শরণখোলার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের সগির মুন্সি ও তার স্ত্রীর কোলজুড়ে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। পিতা-মাতা একমাত্র মেয়ের নাম রাখেন আদুরী আক্তার। আদুরীর শারিরিক গঠন বৃদ্ধি পেয়ে একজন যুবতী নারীতে রূপান্তরিত হয়। পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীরা তাকে মেয়ে হিসাবে দেখেছে। কিন্তু অবিষম্ব্য হলেও সত্য সেই আদুরী আক্তারের লিঙ্গ পরিবর্তন হয়ে সে এখন একজন পূর্ণাঙ্গ পুরুষ।   

বৃহস্পতিবার দুপুরে কথা হয় আদুরির বাবা উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের খেজুর বাড়ীয়া গ্রামের করাতকল শ্রমিক ছগির মুন্সীর সাথে। তিনি বলেন, তার তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে আদুরী মেঝ।  ২০১০ সালে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কাজের সন্ধানে চট্রগ্রামেযান তিনি। সেখানে গিয়ে ছোটোখাটো একটি ব্যবসা শুরু করেন।  এরপর ২০১৭ সালের দিকে তিনি দেখেন আদুরী ছেলেদের মত আচরণ করছে। 

এসব দেখে লজ্জা লাগে তার।  এ জন্য আদুরিকে সারাক্ষণ ঘরের মধ্যে থাকতে বলতেন তিনি।  কিন্তু আদুরী তার কোনো কথাই শোনেনা। এমন আচার আচরন  দেখে বিরক্ত হয়ে সবসময় বকাঝকা করতে থাকেন তিনি। একপর্যায়ে তিনি  আদুরীকে চট্রগ্রামে রেখে পরিবারের অন্য সবা কে নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। আদুরি সেখানে থেকে যায় এবং সে গার্মেন্টসে চাকুরী নেয়।  

আদুরির বাবা বলেন, গত ১২ মে স্ত্রী পুতুলকে নিয়ে আদুরী বাড়িতে আসলে করোনার কারণে ওদের ১৪ দিন আলাদা থাকতে দেই। পরে আমি সবকিছু জেনে দেখলাম আদুরী এখন আর আমাদের মেয়ে নেই সে পুরাপুরি ছেলে হয়ে গেছে । 

মেয়ে থেকে পরিবর্তন হয়ে কিভাবে ছেলে হলো তা জানতে চাইলে আদুরী জানান, প্রায় সাড়ে তিনবছর আগে থেকে আমার শরীরের ভেতর মেয়েদের প্রতি আকর্ষন জাগতে শুরু করে।  আস্তে আস্তে লিঙ্গ পরিবর্তন হয়ে আমি পুরুষে রূপান্তরিত হই। তবে ডানদিকের অন্ডোকোষে মাঝে মাঝে ব্যাথা হত। ডাক্তার দেখানোর পরে তা ঠিক হয়ে যায়।  কিন্তু আমার এ পরিবর্তন বাড়ির কেউ বিশ্বাস করতে চায়নি। তাই গত দুই বছর আগে চট্রগামের রাউজানের ইসামনি পুতুল নামে একটি মেয়েকে তার পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করি। এরপর আমার স্ত্রী অন্তসত্ত্বা  হলে তাকে নিয়ে বাড়িতে আসি। যাতে সবাই বিশ্বাস করে যে আমি আর তাদের মেয়ে নেই এখন তাদের ছেলে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ