পিডিবির ভুতুড়ে বিলে অতিষ্ট কৃষক

  • জামালপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ৫, ২০১৬, ০৭:১৮ পিএম

জামালপুর বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের (পিডিবি) ভুয়া (ভুতুড়ে) বিলে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন জেলার সব সেচ গ্রাহকরা। বিদ্যুতের মিটার রিডিং না দেখে সেচ যন্ত্রের বিদ্যুৎ বিলে অতিরিক্ত ভুয়া বিল দাখিল করায় রোববার (৫ জুন) দুপুরে সেচ যন্ত্রের শতাধিক বিদ্যুৎ গ্রাহক বিক্ষুব্ধ হয়ে পিডিবির কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রোববার জামালপুর বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ কার্যালয়ে শতাধিক বিদ্যুৎ গ্রাহক অভিযোগ করতে এসে দেখেন অফিসে তাদের অভিযোগ নেওয়ার মত কেউ নেই। এ সময় বিদ্যুৎ গ্রাহকরা হট্টগোল শুরু করেন এবং বিক্ষুব্ধ হয়ে ওই কার্যালয় ঘেরাও করেন। পরে মেলান্দহ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এমদাদুল ইসলাম এমদাদ উপস্থিত বিদ্যুৎ গ্রাহকদের ডেকে তাদের সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধরা ঘরে ফিরে যান।

তবে ওই সময় বিদ্যুৎ গ্রাহকরা অভিযোগ করেন, পিডিবির কর্মচারীরা মিটার না দেখে তাদের এলাকার সকল বিদ্যুৎ গ্রাহকদের নামে অতিরিক্ত ভুয়া বিল দাখিল করে কৃষকদের হয়রানি করছেন এবং মামলার ভয় দেখাচ্ছেন। অথচ ভুয়া বিল দাখিলের অভিযোগ নিয়ে পিডিবি কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের কাছে গেলে তারা বিদ্যুৎ গ্রাহক কৃষকদের কোন অভিযোগই আমলে নেয়নি।

এ বিষয়ে মেলান্দহ উপজেলার চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়নের মধ্যেরচর গ্রামের কৃষক মারফত আলী জানান, তার নামে বিগত বোরো মৌসুমের মাঝামাঝি সেচ যন্ত্রের একটি বিদ্যুৎ লাইন পাশ হলেও সেচ চালু হয়নি। অথচ পিডিবি কর্মচারীরা কাগজ কলমে তার লাইনের সংযোগ চালু করেছেন। তবে মিটার লাগননি। তার সেচ যন্ত্রটি পুরো মৌসুমে একদিনও চালু করা হয়নি। ডিজেল ইঞ্জিন দিয়েই বিগত বোর মৌসুম পার করেছেন তিনি। অথচ বিগত মৌসুমের জন্য তার নামে পিডিবি কর্মচারীরা ১ লাখ ৮২ হাজার টাকার ভুয়া বিল দাখিল করেছেন। এ ভুয়া বিলটি নিয়ে তিনি জামালপুর বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মোকছেদুল আলম সোহাগ এবং নির্বাহী প্রকৌশী এস এম ইকবাল এর কাছে কয়েক দফা ধর্ণা দিয়েও কোন প্রতিকার পাননি।

চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়নের শিহাটা গ্রামের কৃষক মুরাদুজ্জামান জানান, তার সেচ যন্ত্রের মিটার রিডিং অনুযায়ী ১৬ হাজার ২৫২ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়েছে। তন্মধ্যে তিনি ৬ হাজার ৯৫০ ইউনিটের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করলেও পিডিবির কর্মচারীরা মিটার না দেখে ১৬ হাজার ৫০০ ইউনিটের ভুয়া বিল দাখিল করেছেন।

এ ব্যাপারে জামালপুর বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোকসেদুল আলম সোহাগ বলেন, কৃষকরা বোরো ক্ষেতের মাঝে ১৫ থেকে ২০ ফুট ওপরে সেচ যন্ত্রের মিটার লাগানোয় মিটারের রিডিং দেখে বিল করা সম্ভব হয়নি। তবে কেউ যদি অতিরিক্ত বিল দাখিলের ব্যাপারে অভিযোগ করেন তা তদন্ত সাপেক্ষে সংশোধন করা যেতে পারে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম