মধুমাসের প্রথম দিনে আম পাড়া শুরু

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২১, ০২:৩৮ পিএম
সংগৃহীত ছবি

রাজশাহী: মধুমাস জৈষ্ঠ্যের প্রথম দিনে আম পাড়া শুরু হয়েছে রাজশাহীতে।প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় ও নির্দেশনা মেনে শনিবার (১৫ মে) সকাল থেকে বিভিন্ন উপজেলার বাগান থেকে পরিপক্ব আম পাড়া হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে পাড়া হচ্ছে কেবল গুটি জাতের আম। স্বাদে-গুনে যার কোনো জুড়ি নেই জাত আমখ্যাত সেই গোপালভোগ নামবে আরও পরে।

রাজশাহীতে সাধারণত সবুজ (কাঁচা) আম বিক্রি করা হয়। এগুলো বাড়ি নিয়ে সনাতন পদ্ধতিতে রেখেই পাকিয়ে সবাই খেতে পারেন। যে কারণে কোনো বিষাক্ত কেমিক্যালের ভয় থাকে না। আর অল্পকিছু আম পেকে যায় গাছেই। সেগুলো খুচরা বাজারে বিক্রি করা হয়। ফলে আমের রাজধানী রাজশাহীতে বিষমুক্ত আমই কেনাবেচা হয়।

রাজশাহী জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত ও বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী, আজ থেকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন জাতের আম পাড়া শুরু হবে। তবে, কোনো আম আগে পাকলে স্ব-স্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানাতে হবে। তার পরিদর্শন শেষেই গাছ থেকে নামানো যাবে আম।  
রাজশাহীতে সাধারণত সবার আগে পাকে গুটি জাতের আম। জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৫ মে থেকে এই আমটি নামাতে পারছেন চাষিরা। আর উন্নতজাতের আমগুলোর মধ্যে গোপালভোগ ২০ মে, রানিপছন্দ ২৫ মে, লক্ষণভোগ বা লখনা নামানো যাবে ২৫ মে থেকে এবং খিরসাপাত বা হিমসাগর ২৮ মে থেকে নামানো যাবে। এছাড়া ল্যাংড়া আম ৬ জুন, আম্রপালি এবং ফজলি ১৫ জুন থেকে নামানো যাবে। আর সবার শেষে ১০ জুলাই থেকে নামানো যাবে আশ্বিনা ও বারি-৪ জাতের আম।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলিম উদ্দিন বলেন, গুটি আম প্রতি বছরই একটু আগে পাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তাই অনেকেই আজ গুটি আম নামাতে শুরু করেছেন। তবে আঁশযুক্ত এই আমের স্বাদ তুলনামূলক কম।

বিভিন্ন জাতের জনপ্রিয় আমের পরিপক্বতা আসার সময়কালের মধ্যে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে উঠবে গোপালভোগ আম। অত্যন্ত সুস্বাদু, আঁশবিহীন, আটি ছোট আম। সাইজ মাঝারি, কেজিতে ৫টা থেকে ৬টা ধরবে। এরপর পাকা শুরু হবে ল্যাংড়া (হিমসাগড়) আম। তাই রাজশাহীতে জুনের প্রথম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে উঠবে ল্যাংড়া আম। নাম ল্যাংড়া হলেও এর স্বাদ অসাধারণ। আটি ছোট ও পাতলা, খোসা খুব পাতলা, রসালো, গায়ে শুধুই মাংসল। এভাবে পর্যায়ক্রমে রাজশাহীর সব আম নামতে শুরু করবে বলেও জানান ফল গবেষণা কেন্দ্রের এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কে জে এম আব্দুল আওয়াল বলেন, চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে ৩৭৩ হেক্টর বাড়িয়ে ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে আম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর ১৭ হাজার ৫৭৩ হেক্টর জমিতে আম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে হেক্টর প্রতি ১১ দশমিক ৯ মেট্রিক টন। মোট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা দুই লাখ ১৯ হাজার মেট্রিক টন। তাপদাহ কেটে গেলে আর নতুন কোনো প্রকৃতিক দুর্যোগ না এলে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো সমস্য হবে না বলেও মতামত রাজশাহী কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তাদের।

সোনালীনিউজ/আইএ