পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে ছেলের বিয়ে দিলেন শিক্ষিকা

  • চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২২, ১১:৫৩ এএম
ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গা: রোববার হাতে মেহেদি নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করতে আসে নববধূ স্কুলছাত্রী শারমিন খাতুন। মায়ের ইচ্ছা পূরণে ছেলের সঙ্গে নিজের স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ে দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শামসুন্নাহার। একজন শিক্ষিকার এমন কাণ্ডে হতবাক এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের ছোটশলুয়া গ্রামের বিলপাড়ার দিনমজুর অসোক আলীর মেয়ে শারমিন খাতুন (১১) বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। তার সঙ্গে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শামসুন্নাহার তার ছেলে যদুপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র আব্দুর রহমানের গোপনে বিয়ে দেন চলতি মাসের ২০ তারিখে। প্রথম কয়েকদিন বিষয়টি গোপন থাকলেও শনিবার বর আব্দুর রহমান শ্বশুরবাড়ি ছোটশলুয়া গ্রামে বেড়াতে গেলে বাল্যবিয়ের বিষয়টি জানাজানি হয়।

বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, রোববার হাতে মেহেদী নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করতে আসে স্কুলছাত্রী শারমিন খাতুন। এ সময় বিয়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে স্বীকার করে জানায় এক সপ্তাহ আগে ম্যাডামের ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে।

অভিযুক্ত স্কুলশিক্ষিকা শামসুনাহার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে নিজের দশম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলের বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, তার নিজের বাড়ির অবস্থা খুব একটা ভালো না। বিশেষ করে তার মায়ের শরীর খুব খারাপ। মায়ের ইচ্ছা নাতির বউ দেখার। মূলত মায়ের ইচ্ছা পূরণ করার জন্যই নিজের ছেলের সঙ্গে তারই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ে দিয়েছেন। তবে এখনও বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়নি। বেগমপুর দাখিল মাদরাসার শিক্ষক ও বেগমপুর ইউনিয়নের কাজি মফিজুল ইসলাম ধর্মীয় রীতি মেনেই বিয়ে দিয়েছেন।

বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিয়ের বিষয়টি জানেন না বলে জানান।

এ ব্যাপারে বিয়ের কাজি মফিজুল ইসলাম জানান, এ ধরনের কোনো বিয়ে তিনি পড়াননি। তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাল্যবিয়ের বিষয়টি আমাদের জানা নেই।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম ভুইয়া জানান, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোনালীনিউজ/এসআই