মহাদুশ্চিন্তায় জাহাঙ্গীর বিরোধীরা 

  • গাজীপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৩, ১২:১১ পিএম

ঢাকা: গাজীপুরে আজমত উল্লার পক্ষ নিয়ে যারা বুঝে না বুঝে অনেক সময়ে জেনে না জেনে সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে বিরোধিতা করেছেন সেইসব বিরোধীরা এখন মহা দুশ্চিন্তায়। 

স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় বিপাকে জাহাঙ্গীর বিরোধীরা। শুক্রবার (২৬ মে) সকাল থেকে বেলা ১১ টার পর্যন্ত গাজীপুর মহানগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের আজমত উল্লার সমর্থন ও অনুসারীরা গণমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন। 

নাম না প্রকাশ করার শর্তে মহানগরীর ১৩ নং ওয়ার্ডে ইটাহাটা এলাকার বাসিন্দা আজমত উল্লাহর এক সমর্থক বলেন, তিনি শুধু সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলমকে দুর্নীতিবাজ হিসেবে লোকজনদের কাছে নীতিবাচক কথা বলেছেন। 

এখন জাহাঙ্গীর ভাই এর মা মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। এখন যদি প্রতিশোধ নিতে মেয়রের কর্মী সমর্থকরা হামলা চালায়। তাহলে বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হবেন। এই ভাবে তিনি মহাদুশচিন্তায় পড়েছেন। 

এদিকে নাও জড়ো এলাকার বাসিন্দা সৈকত নামে এক কর্মী জানিয়েছেন, তিনি নিজের পকেটের টাকা খরচ করে ঘড়ি মার্কা প্রতিকের ফিল্ড খারাপ করেছেন। এটা তো ঘড়ির কর্মী সমর্থকরা জানেন। তিনি বলেন, এখন যদি জাহাঙ্গীরের কর্মী সমর্থকরা মাঠে প্রতিশোধ নিতে নামেন তাহলে আমাদের অস্তিত্ব হুমকিতে পড়বে। 

অপর দিকে নতুন মেয়র হিসেবে জায়েদা খাতুনের নাম ঘোষণা হওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম গণমাধ্যমে বলেন, তার মা বলেছে,সবাইকে নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়নে কাজ করবেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবেন। প্রধানমন্ত্রী আমাদের গার্ডিয়ান। দেশের উন্নয়নে তাকে সহযোগিতা করতে চাই।

তিনি বলেন, আমি জন্মের পর থেকেই আওয়ামী লীগ করি। আমি এখানকার আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত ব্যক্তি। মানুষ আমার মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমি ও আমার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। আমরা সবার সহযোগিতা নিয়ে একটা সুন্দর শহর গড়ে তুলব। আমরা এখানে কাউকে শত্রুর ভাবিনা। কারো প্রতি আমাদের রাগ গোরসা নেই।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় শুরু হয় গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। বিরতিহীনভাবে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হয়। কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় ভোট।

ভোটগ্রহণের শুরু থেকে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের পঞ্চম তলার কন্ট্রোল রুম থেকে নির্বাচন মনিটরিং করা হয়। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া না গেলেও ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষে ঢুকে পড়ায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। নির্বাচন কমিশন থেকে সিসি ক্যামেরায় দেখে খবর দেয়া হলে তাদের আটক করা হয়।

এই নির্বাচনে মেয়র পদে ৮ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন প্রার্থী আছেন। এছাড়া সাধারণ ওয়ার্ডে একজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

এবারের নির্বাচনের গাজীপুরের পাশাপাশি  সারা দেশের মানুষের নজর ছিল মেয়র প্রার্থীদের নির্বাচনী ফলাফলের। সর্বশেষ মূল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ফলাফল হলো: মোট কেন্দ্র:৪৮০প্রাপ্ত কেন্দ্র :৪৮০ আজমত উল্লাহ খান নৌকা প্রতিকে ২,৭১,০৭৭ ভোট পেয়েছেন। স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন  ২,৮৮,০০৭ ভোট পেয়েছেন। মোট ১৬৯৩০ ভোট বেশি ভোট পেয়ে ঘড়ি মার্কা বিজয়ী।

গাজীপুর সিটির ৫৭টি ওয়ার্ডে এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৭ জন, নারী ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৮ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার আছে ১৮ জন। ৪৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ ভোটার এই নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন।

সোনালীনিউজ/এআর