চুয়াডাঙ্গা: তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেও সারা বিশ্বের ন্যায় চুয়াডাঙ্গার জীবননগরও নানা কর্মসূচির মধ্য মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালিত হয়।
শ্রমিক দিবস কি এবং কেন পালন করা হয় এসবের কিছুই জানেন না গ্রামের শ্রমজীবী মানুষেরা। মে দিবস আসে মে দিবস যায় শ্রমিকদের ভাগ্যের চাকার পরিবর্তন হয় না। পিছিয়ে রয়েছে এসব ছিন্ন মূলের তৃণমূলের শ্রমিকেরা। সরকারের সুবিধাভোগী আওতা থেকেও বন্ঞ্চিত তারা।
চলমান তাপদাহে বেশি কষ্টে আছেন খেটে খাওয়া দিনমজুর, রিক্সা-ভ্যান চালক ও কৃষকরা। শীতে সরকারিভাবে সুযোগ-সুবিধা, খাদ্য সামগ্রী এবং কম্বল বিতারণ করলেও অতি তীব্র তাপপ্রবাহ কেন করা হয় না এমন প্রশ্ন চায়ের দোকানের ট'শোতে ?
তেমনি দেখা মিলে কয়েকজন খেটে খাওয়া দিনমজুর কৃষকের সাথে। কথা হয় রহিম, শিমুল, জিন্টু পিন্টুর সাথে। বাড়ি জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের আবাসন পল্লীতে। ভ্রাম্যমাণ দোকান, ইটভাটা ও কৃষিক্ষেতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা।
[248545]
কিন্তু বর্তমানে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ তেমন কোনো কাজ না থাকায় মাঠে কৃষি জমিতে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। তবে অনেকে তীব্র তাপপ্রবাহে কাজ না করতে না পেরে মানবতার জীবন যাপন করছেন। তারা বলেন, হামার কিসের শ্রমিক দিবস।
কর্ম করলি খাতি পাই না করলি ভাত কপালে জোটে না কো? কিসের শ্রমিক দিবস টিবস বুঝি নেকো। আমাদের প্যাটে খিদে, হোগল দিনই আমাদের প্যাট দিবস। আজকেই প্রথম শুনলুম কিসের বলে শ্রমিক দিবস। কাম নাই তো ছেলেপিলে খেতিও পারবেক নাই। এখন তো কোনো কাম নাই। তীব্র তাপপ্রবাহে কয়দিন থেকে বসি থাকি আজ কামে আইছি। কাম করি যে কয়টা টেকা জোগার করছুনু তাও শেষ। মাঠে ধান কাটা কাজ বচছে কিন্তু তীব্র তাপদাহে কাজ করতি পাচ্ছিনে। দুনিয়াত বলে কতো কি হয় হামার ভাগ্যে কিছুই হয় না। শুধুমাত্র মনোহরপুর আবাসন নয়, তার মতো অনেকে নারী দিবস পালনের বিষয়টি না জানলেও প্রতিদিনই কর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কর্ম তাদের নিত্য দিনের সঙ্গী।
সীমান্তবর্তী উপজেলার মনোহরপুর আদিবাসী পল্লী, মনোহরপুর আবাসন, পেয়ারাতলায়, সুবলপুর, শিয়ালমারী, দেহাটি সকল নারীদেরই একই কথা পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরকেও সমান তালে কাজ করতে হবে।
তবেই স্বামী সন্তান নিয়ে একটু শান্তিতে হলেও দিন যাবে। তাই পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও মাঠে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেন। তবে এতো পরিশ্রম করেও তারা মজুরি বৈষম্যের শিকার। এখনও দিনমজুরিতে পুরুষের অর্ধেক পারিশ্রমিক পান তারা।
গত বুধবার ১লা মে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সীমান্তবর্তী সীমান্ত ইউনিয়নের হরিহরনগর আমতলার মাঠে টানা তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে শ্রমিক দিবসের দিনেও মাঠে কাজ করে বাড়ি ফিরছে শ্রমিকরা। ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠা ইট ভাটাইও কাজ করছে নারী-পুরুষ শ্রমিকেরা।
সরকারের সুযোগ সুবিধা পায় কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চেয়ারম্যান মেম্বাররা পেট ভরেক নাই, হামারে কি চ্যাট দিবো ? ভোট নিতি পারলি ডুমুরের লাহান হইয়ি যায়। দুই এক জনেক ইলিফ দেই। ইলিফ-টিলিফ দিয়া কি হবি? হামারে কর্ম করতি চাই।
এআর