লালমনিরহাট: হঠাৎ বন্যার আবারো তিস্তার পানি কমে যাচ্ছে। পানি নেমে যাচ্ছে প্লাবিত এলাকার বাড়ি ঘর থেকে। তবে বানভাসী মানুষের দূর্ভোগ এখনো কমেনি।
দীর্ঘ সময় দূষিত পানিতে চলাফেরা করায় অনেকের দেখা দিয়েছে ডায়েরিয়া আমাশায় সহ নানা চর্ম রোগ। বানভাসী মানুষদের পায়ের আঙুলের ফাঁকে লালচে ও সাদা ফ্যাকাসে রং এর ঘা দিয়েছে। কারো কারো পা ফুলে যাচ্ছে। বয়স্ক, বৃদ্ধা শিশুরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে তিস্তা বন্যা কবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাড়ি ঘর থেকে পানি নেমে যাওয়ায় বাড়িতে ফিরছে অনেকে। তবে এখনো নিম্নাঞ্চলের অনেক বসতবাড়িতে পানি রয়েছে। দূষিত পানি ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশের কারণেই তাদের চুলকানি কোচ পচড়া রোগ হচ্ছে। অনেক বানভাসি এখনো তিস্তা বাঁধের রাস্তায় একচালা ঘর করে গবাদি পশু নিয়ে বসবাস করছেন। বাঁধেই চুলা জ্বালিয়ে করছেন রান্না।
তিস্তার ভাঙনে বার বার বসতভিটা সরিয়ে নিঃস্ব বানভাসি মানুষগুলো রাস্তার ধাঁরে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছেন। কর্মহীন এসব মানুষগুলো অর্থ কষ্টে রয়েছেন। চেয়ে আছেন সরকারি সহায়তার দিকে। যারা দুবেলা ভাতের যোগান দিতে পারে না, তারা ওষুধ কিনবে কি দিয়ে। তাই সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসা সহায়তার দাবি জানিয়েছেন তারা।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটি এলাকার বাসিন্দা মোমেনা বেওয়া (৭০) বলেন, বন্যার পানি নেমে গেলেও এখনো বসত ভিটার মেঝে কাঁদা ও স্যাঁতস্যাতে থাকায় চলাফেরা করতে কষ্ট হচ্ছে। এজন্য তার পায়ে ঘাঁ হয়েছে।
[254201]
বন্যা কবলিত আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের ২নং স্পার বাঁধ এলাকার বাসিন্দা শফিকুল (৪০) জানান, গত এক সাপ্তাহ থেকে আমার বসত ভিটায় পানি জমে আছে। রাস্তার উপর একচালা ঘর করে গরু, ছাগল রেখেছি এবং রান্নাও করছি রাস্তায়। গত দুদিনে ঘর থেকে পানি নেমে গেলেও উঠানে কাদা পানি। সব সময় পানিতে চলাফেরা করায় পরিবারের প্রায় সকলেরই পায়ে চুলকানি হয়েছে। ওষুধ খেয়েও চুলকানি থামছে না।
এদিকে গত দুইদিন থেকে তিস্তার পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা থেকে তিস্তা ডালিয়া পয়েন্টের পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
লালমনিরহাট সিভিলে সার্জন ডা: আব্দুল হাকিম জানান, বন্যার দূষিত পানিতে দীর্ঘ সময় চলাফেরা করার কারণে ডায়রিয়া সহ নানা চর্ম রোগ দেখা দিতে পারে।
এজন্য পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে, চলতে হবে সতর্ক অবস্থায়। নিয়মিত সাবান ব্যবহার করে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। তিনি প্রয়োজনে বন্যার্তদের নিকটতম স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসা ও পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানান।
এআর