বরিশালে এক চাঞ্চল্যকর গৃহবধূকে গণধর্ষণ মামলায় চার যুবককে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে বিচারক মো. রকিবুল ইসলাম রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মান্নান মৃধা জানিয়েছেন, দীর্ঘ ১০ বছরের আইনি লড়াই শেষে ভুক্তভোগী পরিবার অবশেষে ন্যায্য বিচার পেয়েছে।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মো. রাসেল গাজী, মো. রাজিব জমাদ্দার, মো. জাহিদ হাওলাদার এবং পলাতক মো. খোকন খান। রায়ের সময় তিনজন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পলাতক খোকন খানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আদালত প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৯ নভেম্বর বিকেলে আসামি রাসেল গাজী ভিকটিমের বাসায় প্রবেশ করে যৌন নিপীড়নের চেষ্টা চালান। পরদিন ১০ নভেম্বর অটোরিকশা চালকের সহায়তায় তিনি এবং তার সহযোগী রোকন খান, রাজিব জমাদ্দার ও জাহিদ হাওলাদার ভিকটিমকে অপহরণ করে শহরের খ্রিস্টানপাড়া ও ৩০ গোডাউন এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে রাতভর ভিকটিমকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়। পরদিন সকালে স্থানীয়রা ভিকটিমকে উলঙ্গ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তার মা কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান ২০১৭ সালের ২৩ মে চার আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে আদালত ৮ জন সাক্ষীর বিবেচনায় আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন।
রায়ে বলা হয়েছে, নারীর প্রতি এই বর্বরোচিত অপরাধ মানবতাবিরোধী। রাষ্ট্রের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা রায় ঘোষণার পর আদালতের বাইরে কান্না ও স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, ন্যায়বিচার পেতে দীর্ঘ সময় লেগেছে, কিন্তু অবশেষে তারা ন্যায্য বিচার পেয়েছেন।
এসএইচ