পদ্মার চরজুড়ে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’ ১২০০ সদস্যের সাঁড়াশি অভিযান

  • ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৫, ০৬:৫৫ পিএম
ছবি: প্রতিনিধি

পদ্মা নদীর বিস্তীর্ণ চরে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাস ও অস্ত্রের ত্রাস চলিয়ে আসা কাকন বাহিনীসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী দলের বিরুদ্ধে অবশেষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান শুরু করেছে। রবিবার ভোর ৪টা থেকে পাবনার ঈশ্বরদী, আমিনপুর, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ও রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নদীচর এলাকায় অভিযান শুরু হয়, যা এখনও টানা চলছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কাকন বাহিনী কয়েক বছর ধরে চরে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি, মুক্তিপণ আদায়, বালু লুট ও কৃষকদের ফসল লুট করছিল। প্রতিবাদ করলে বন্দুক উঁচিয়ে গুলি চালানো তাদের স্বাভাবিক কাজ ছিল। সর্বশেষ ২৭ অক্টোবর খড় কাটাকে কেন্দ্র করে কাকন বাহিনীর গুলিতে তিন কৃষক নিহত হয়। এ হত্যাকাণ্ড জনমনে ক্ষোভের স্ফুলিঙ্গ ছড়ায়।

ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার সরকার জানান, অভিযানে চরের ঝোপঝাড় ও পরিত্যক্ত ঘাঁটি থেকে দুটি শুটারগান, চাইনিজ কুড়াল ও বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন, “অভিযান এখনো চলমান। ড্রোন দিয়ে কাশবন, কলাবাগান ও জঙ্গলের ভেতর নজরদারি চালানো হচ্ছে। অভিযান শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে।”

রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান আরও জানান, এখন পর্যন্ত ৫টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, অসংখ্য দেশীয় অস্ত্র, মাদক ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। বাহিনীর ২১ সদস্যকে আটক করা হয়েছে।

চর দিয়াড় বাহাদুরপুরের মৎস্যজীবী আনোয়ার হোসেন বলেন, “পুলিশ যাদের ধরে নিয়ে গেছে, তারা প্রায় সবাই কাকন বাহিনীর সঙ্গে জড়িত।”

অভিযানে পুলিশ, র‍্যাব ও এপিবিএনসহ বিভিন্ন ইউনিটের মোট ১২০০ সদস্য অংশগ্রহণ করছে। চরাঞ্চলের বৈরী ভৌগোলিক পরিবেশ, পথঘাট ও নদীর প্রবাহ অভিযানের চ্যালেঞ্জকে আরও কঠিন করেছে।

চরের সাধারণ কৃষক ও জেলেরা জানান, “বছরের পর বছর আমরা আতঙ্কে ছিলাম। মাঠে ফসল তুলতেও ভয় লাগত। এই অভিযান যদি সম্পূর্ণ হয়, আমাদের বেঁচে থাকার রাস্তা খুলবে।”

উল্লেখ্য, ২৭ অক্টোবর চরে খড় কাটাকে কেন্দ্র করে কাকন বাহিনীর গুলিতে তিন জন নিহত হন।

এসএইচ