কলাপাড়া: বিশ্বব্যাপী আয়োজিত ‘ফসিল গ্যাস সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক কর্মদিবস–২০২৫’ উপলক্ষে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অনুষ্ঠিত হলো ব্যতিক্রমী রঙিন নৌবহর প্রদর্শনী ও সচেতনতামূলক প্রতিবাদ কর্মসূচি। বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ১০টায় আন্ধার মানিক নদীতে এ আয়োজন উপকূলজুড়ে সৃষ্টি করে ভিন্নধর্মী পরিবেশবাদী আবহ।
পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা ধরা, ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশ এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী প্ল্যাটফর্ম আমরা কলাপাড়াবাসী যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে। সকাল থেকেই নদীতে জড়ো হয় রঙ–বেরঙের নৌকা। প্রতিটি নৌকায় ছিল স্লোগান, ব্যানার এবং পরিবেশবান্ধব নানা বার্তা।
আন্দোলনকারীরা জানান, উপকূলীয় অঞ্চলে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, এলএনজি টার্মিনাল ও পাইপলাইন সম্প্রসারণ জীববৈচিত্র্য ও মানবজীবনের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠছে। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন— এসব প্রকল্প উপকূলের ভাঙন বাড়াবে, লবণাক্ততা বৃদ্ধি করবে এবং জলবায়ু ঝুঁকি আরও তীব্র করবে।
তাদের দাবি, “পরিবেশ বাঁচাতে হলে এখনই ফসিল জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে এবং নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে দ্রুত অগ্রসর হতে হবে।”
প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা নৌবহর কর্মসূচির সময় নদীর দুই তীরজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। বিভিন্ন বয়সী মানুষ নৌকায় হাত নেড়ে চলমান র্যালিকে সমর্থন জানান।
কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন— কলাপাড়া প্রেসক্লাব সভাপতি নেছারউদ্দিন আহমেদ টিপু,পরিবেশ সংগঠক মেজবাহ উদ্দিন মাননু,নজরুল ইসলাম, সাইফুল্লাহ মাহমুদ এবং নাজমুস সাকিব।
বক্তারা বলেন, উপকূলীয় মানুষের টিকে থাকার লড়াই এখন পরিবেশ রক্ষার ওপর নির্ভর করছে। তাই উন্নয়ন প্রকল্পের নামে পরিবেশ ধ্বংস বন্ধ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক আন্দোলনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্থানীয় পর্যায়েও প্রতিবাদ জোরদার করতে হবে।
পাঁচ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নৌবহরটি নদীর মোহনায় গিয়ে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। আয়োজকরা বলেন, “প্রকৃতি রক্ষার সংগ্রাম একদিনের নয়; ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিরাপদ পৃথিবী দিতে আন্দোলন ধারাবাহিকভাবে চলবে।”
পিএস