আসামি ধরতে গিয়ে ১০টি গরু নিয়ে গেল পুলিশ, তিনটির মৃত্যু 

  • ময়মনসিংহ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২৫, ০৪:৪৭ পিএম
ছবি: প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে পুলিশ তার খামার থেকে ১০টি গরু জব্দ করেছে। তবে গরুগুলোর যথাযথ খাবার ও পরিচর্যার অভাবে ইতিমধ্যে তিনটি গরু মারা গেছে। বাকি গরুগুলোও মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে। পুলিশ বলছে, চোরাই গরু সন্দেহে গরুগুলো জব্দ করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয়রা দাবি করছেন, দীর্ঘদিন ধরে গরুগুলো খামারে লালন-পালন করা হচ্ছে।

৬ জুন গভীর রাতে হালুয়াঘাট থানার ওসি হাফিজুল ইসলাম হারুনের নির্দেশে এসআই শুভ্র সাহা কাইয়ুমের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেন। অভিযানের সময় তার খামারে থাকা ১০টি গরু ও ২টি বাছুর জব্দ করা হয়। প্রথমে গরুগুলো থানায় রাখা হলেও পরে স্থানীয় খামারী আরফান আলীর খামারে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু সঠিক খাবার-দাবার ব্যবস্থা না থাকায় একের পর এক গরু অসুস্থ হয় এবং তিনটি মারা যায়। এতে খামারের ক্ষতি প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকার। 

স্থানীয়দের মতে, পাঁচ বছর ধরে গ্রেপ্তার কাইয়ুমের স্ত্রী ও তার বাবা গরুগুলো লালন-পালন করছিলেন। এক ব্যক্তি জানান, তিনি একটি গরু বিক্রি করেছিলেন, কিন্তু টাকা পাওয়ার আগেই কাইয়ুম গ্রেফতার হন। এরপরও তার টাকা পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, গ্রামবাসী কাইয়ুমের বাড়িতে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ বাধা দিয়েছে এবং স্থানীয়দের কোনো কথাই শোনেনি।

থানার ওসি হাফিজুল ইসলাম হারুন সাংবাদিকদের সামনে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে এসআই শুভ্র সাহা মুঠোফোনে জানিয়েছেন, একাধিক মামলার আসামি কাইয়ুমকে গ্রেফতারের পর চোরাই গরু সন্দেহে ১০টি গরু জব্দ করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই টিটু জানান, জব্দের পর গরুগুলোকে খাবার ও চিকিৎসা দেওয়ার দায়িত্ব তিনি নিজে সামলাচ্ছেন।

গ্রেফতার কাইয়ুমের স্ত্রী কুলসুম বেগম অভিযোগ করেছেন, থানায় নেওয়ার পর পুলিশ তাকে গরুদের খাবার দিতে বলছে। তিনি চেষ্টা করছেন, কিন্তু থানার দূরত্ব ৫-৭ কিলোমিটার হওয়ায় যথাযথ পরিচর্যা সম্ভব হচ্ছে না। ইতোমধ্যে তিনটি গরু মারা গেছে এবং তিনি এখন নিঃস্ব হয়ে গেছেন।

ময়মনসিংহ জর্জ কোর্টের আইনজীবী ডা. মো. রফিকুল ইসলাম জানান, স্বামীর অপরাধ প্রমাণিত না হতেই স্ত্রীর খামার শূন্য করা আইনের পরিপন্থী। জব্দ করতে হলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা আবশ্যক।

এলাকাবাসী পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সুষ্ঠু তদন্ত এবং পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়েছেন।

এসএইচ