চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও সাবেক ডাকসু ভিপি মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী মানুষের কল্যাণের রাজনীতি করে, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করে। চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসী সুযোগ দিলে জেলার কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিকে আধুনিক রূপ দিতে কৃষি ভিত্তিক ইপিজেড গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, একটি বিমানবন্দর এবং একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
শনিবার নবাবগঞ্জ কলেজ মাঠে ছাত্র-যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে সৎ, আদর্শিক ও মানবিক মূল্যবোধের অধিকারী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এমন একটি দেশ গড়তে হবে, যেখানে নারীরা নিরাপদে চলাচল করবে এবং যুবকরা স্বপ্ন হারাবে না অর্থের অভাবে। তিনি বলেন, জেলার অবকাঠামো উন্নয়ন, তৃণমূলের রাস্তা-অলিগলি চলাচলযোগ্য করে তোলা এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জকে নিরাপদ নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। ব্যবসায়ীরা নিরাপদে বাড়ি ফিরবে, মা-বোনেরা নিশ্চিন্তে রাস্তায় চলাফেরা করবে। যুবসমাজকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করে বেকারত্ব দূরীকরণের পরিকল্পনাও তুলে ধরেন তিনি।
জামায়াত ক্ষমতায় গেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জকে দেশের মডেল জেলা হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করে বুলবুল বলেন, কারও প্রপাগান্ডায় বিভ্রান্ত না হয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে জনগণকে সচেতন ভূমিকা রাখতে হবে। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অধিকার রাষ্ট্রীয়ভাবে নিশ্চিত করে মানবিক ও নিরাপদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ গড়ে তোলা হবে।
জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, যারা চাঁদাবাজি-সন্ত্রাস করে বা নিজের দলের কর্মীকেও হত্যা করে, তাদের ক্ষমতায় বসানো যায় না। তারা দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য নয়। নূরুল ইসলাম বুলবুলকে তিনি জীবন্ত শহীদ উল্লেখ করে বলেন, তাঁর হাত ধরে শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জ নয়, পুরো দেশ আলোকিত হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে তাঁকে সংসদে পাঠানোর আহ্বান জানান তিনি।
ইসলামি ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, নূরুল ইসলাম বুলবুল শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জের নয়, পুরো ইসলামী আন্দোলনের সম্পদ। তিনি বলেন, ডাকসু, রাকসু ও চাকসু মিলিয়ে তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা ও নিয়মশৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। যেই আদর্শিক সংগঠনের ছাত্র সংগঠন তিন মাসে বিশ্ববিদ্যালয় পাল্টে দিতে পারে, সেই জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে তিন মাসেই দেশকে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত করতে পারবে। তিনি বলেন, যাদের নিজেদের নেতাকর্মীরা নিরাপদ নয়, তাদের কাছে দেশও নিরাপদ থাকতে পারে না। সন্তানের ভবিষ্যৎ সুরক্ষায় একবার জামায়াতে ইসলামীদের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ডাকসু ভিপি আবু সাদিক কায়েম বলেন, জুলাই বিপ্লবে নূরুল ইসলাম বুলবুল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি শুধু একটি জেলার নয়, পুরো দেশের সম্পদ। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামি ছাত্রশিবির এমন সংগঠন যেখানে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি বা অনৈতিকতা নেই। দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে ন্যায়-ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে মানুষের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, অতীতে বিভিন্ন দলকে ক্ষমতায় বসানো হলেও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে। সীমান্ত হত্যা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বেকারত্ব দূরীকরণে যুবকদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রকল্প নেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ভিপি ইব্রাহীম হোসেন রনি বলেন, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা প্রপাগান্ডা ছড়িয়েও কেউ ভোট ঠেকাতে পারেনি। হিন্দু-বৌদ্ধসহ অমুসলিমরাও দাঁড়িপাল্লায় আস্থা রেখেছে। তিনি বলেন, বড় দল দিয়ে চাঁদাবাজি করা যায়, কিন্তু মানুষের মন জয় করা যায় না।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, আগামীর ব্যালট যুদ্ধে ডাকসু-চাকসু-রাকসুর মতোই ইসলামের বিজয় নিশ্চিত করতে হবে জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু বকরের সভাপতিত্বে এবং সদর উপজেলা আমীর হাফেজ আব্দুল আলিমের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী রাজশাহী মহানগর আমির ড. কেরামত আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে প্রার্থী ড. মিজানুর রহমান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক পৌর মেয়র অধ্যক্ষ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর-৩ আসনের সাবেক এমপি অধ্যাপক লতিফুর রহমান প্রমুখ। সমাবেশে জেলা ও উপজেলার সব পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এসএইচ