চোখের জলে শিশু সাজিদকে বিদায়, জানাজায় মানুষের ঢল

  • রাজশাহী প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২৫, ০২:৩২ পিএম
ছবি : প্রতিনিধি

রাজশাহী: রাজশাহীর তানোরে নলকূপের গর্তে পড়ে নিহত সাজিদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাজিদের জানাজায় মানুষের ঢল নেমেছিল। তানোরের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া নিবাসী রাকিব উদ্দীনের দুই বছরের শিশু সন্তান সাজিদ সবাইকে ব্যথিত করে চিরবিদায় নিলেন। শোকে স্তব্ধ হয়েছে পুরো গ্রাম।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় নেককিড়ি কবরস্থান-সংলগ্ন মাঠে জানাজা শেষে সাজিদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

আগেরদিন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে সাজিদের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়ে। একই দিন গভীর নলকূপের ৪০ ফুট মাটি খনন করে ৩২ ঘণ্টা পর রাত ৯টার দিকে শিশু সাজিদকে উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

জানাজার মাঠে হজারো মানুষের ঢল নামে। গ্রামের বৃদ্ধ থেকে শুরু করে স্কুলপড়ুয়া ছেলেরা সবার চোখে কান্না দেখা গেছে। কারও কণ্ঠে ফিসফিস—‘আল্লাহ, এমন মৃত্যু কেউ না পাক। সাজিদের ছোট্ট দেহটি যখন সাদা কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় আনা হলো, তখন কান্নার রোল পড়ে যায় চারপাশে। তার মা-বারবার ছুটে আসতে চাইছিলেন-করছেন আহাজারি। লোকজন ধরে রেখেছিল তাকে, কিন্তু কান্না থামাতে পারেনি কেউ।

জানাজার নামাজের ইমামতি করেন কাজী মাওলানা মিজানুর রহমান। ইমাম সাহেব জানাজা শেষে যখন তাকবির দিলেন, মানুষ হাত তুলল দোয়ার ভঙিতে। হাজারো কণ্ঠে দোয়া অনুষ্ঠিত হলো। সবাই সাজিদের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করেন। একইসঙ্গে এ দোয়াও করেন, যেন তার পরিবারকে আল্লাহ ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করেন।

জানাজা শেষে সাজিদের ছোট্ট কফিনটা যখন কবরের দিকে নেওয়া হলো, তখন বাতাস যেন থেমে গেল, শুধু শোনা যাচ্ছিল কান্নার শব্দ। কান্না করছেন স্বজনরা। একটি শিশুর জানাজা—যেখানে অংশ নিয়েছে পুরো গ্রাম, এমন দৃশ্য আগে কখনও দেখেনি গ্রামবাসী। নিহত সাজিদের বাবা রাকিবুল গর্ত খননকারীর বিচার দাবি করেছেন। 

গত, বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রাজশাহীর তানোরের পাচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়ায় সাজিদ গভীর নলকূপের পরিত্যক্ত গর্তে পড়ে নিখোঁজ হয়। প্রায় ৩৫ ঘণ্টার অভিযান শেষে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ৫০ ফুট মাটি খনন করে শিশুটিকে উদ্ধার করে। মারা যাওয়া সাজিদ কোয়েলহাট পূর্বপাড়ার রাকিবুল ইসলামের ছেলে। সাজিদকে হারিয়ে শোকে কাতর হয়ে পড়েছে পরিবার। উৎসুক জনতা ও স্থানীয় মানুষরা তার মৃত্যুতে সমানভাবে ব্যথিত হয়েছেন।

পিএস