পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় একটি আবাসিক হোটেল থেকে ফাহিমা আক্তার (২৫) নামে এক নারী পর্যটকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে ঘটনার পর থেকে তার সঙ্গে থাকা স্বামী পরিচয়ধারী আরিফ হোসেন নামে সেই যুবককে পাওয়া যায়নি। হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, ঘটনার পর থেকেই ওই যুবকের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে আনুমানিক ১১ টায় কুয়াকাটা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত হোটেল আলীশান–এর ১০৫ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
হোটেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, প্রথমে পর্যটক পরিচয়ে রুম বুকিং নেওয়া হলেও পরবর্তীতে মাসিক চুক্তিতে প্রতিদিন ২০০ টাকা হিসেবে মাসে ৬ হাজার টাকায় ওই কক্ষে দীর্ঘদিন থাকার পরিকল্পনা করছিলেন তারা।
হোটেল রেজিস্ট্রার অনুযায়ী, নিহত ফাহিমা আক্তারের স্বামী হিসেবে আরিফ হোসেনের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার ধানখালী এলাকায় উল্লেখ করা হলেও ফাহিমা আক্তারের স্থায়ী ঠিকানা রেজিস্টারে লেখা হয়নি।
পুলিশ জানায়, গত ২ ডিসেম্বর আরিফ হোসেন নামের ওই যুবকের সঙ্গে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ফাহিমা আক্তার হোটেল আলীশানের ১০৫ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন। দীর্ঘদিন অবস্থানের পর বুধবার রাতে কক্ষের ভেতর থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় কক্ষের বাইরে তালা মারা ছিল এবং ভেতর থেকে সিটকানি দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। তবে কক্ষে আরিফ হোসেনকে পাওয়া যায়নি।
হোটেল আলীশানের ম্যানেজার রুবেল জানান, তারা প্রথমে ২ ডিসেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যটক হিসেবে থাকার কথা জানিয়েছিলেন। পরে মাসিক চুক্তিতে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেন। আরিফ হোসেন নিজেকে কুয়াকাটার একটি পাঁচতারা আবাসিক হোটেলের মার্কেটিংয়ে কাজ করে বলে পরিচয় দেন।
তবে ওই পাঁচতারকা হোটেলের ম্যানেজার রাসেল আকন বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, “আমাদের হোটেলে কোনো স্থায়ী মার্কেটিং ম্যানেজার নেই। বিভিন্ন সময় কিছু লোক পর্যটক এনে কমিশনের ভিত্তিতে কাজ করে, তবে এই ব্যক্তির সঙ্গে আমাদের কোনো পরিচয় নেই।”
হোটেল আলীশানের মালিক শহীদ হোসেন বলেন, “আমি মাসিক চুক্তিতে তাদের রুম ভাড়া দিয়েছিলাম। অবস্থানকালে তাদের মধ্যে কোনো ঝগড়া বা চিৎকার লক্ষ্য করিনি। বুধবার বিকেল থেকে রুম তালাবদ্ধ দেখে সন্দেহ হয়। পরে জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি, ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই নারী। তার স্বামীকে সেখানে পাওয়া যায়নি। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাই।”
খবর পেয়ে মহিপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হলেও মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহব্বত খান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন করেছে। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এম