সরগরম আ.লীগের মাঠ, দর্শক সারিতে বিএনপি

  • আব্দুস সালাম আরিফ, পটুয়াখালী | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০১৬, ০৪:০৫ পিএম

পটুয়াখালী: জেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির মাঠ হঠাৎ করেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। শুধু শহরে নয়, গ্রামের হাট বাজারেও চলছে এ নিয়ে আলোচনা। কে হচ্ছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান- এ প্রশ্ন এখন মুখে মুখে ঘুরছে। 

এ ছাড়া ফেসবুক টুইটারের মতো সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে এ নিয়ে চুল চেরা বিশ্লেষণ। অনেকে ফেসবুকে সম্ভাব্য প্রার্থীর পক্ষে প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন। অন্যদিকে, এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামী লীগের চির চেনা গ্রুপিংয়ের বিষয়টিও অনেকটা সামনে চলে এসেছে। 

তবে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত আসনের সদস্য মনোনীত করতে কোনো ধরনের ভুল সিদ্ধান্ত নিলে অথবা সাধারণ নেতা-কর্মীদের মতামতকে উপপেক্ষা করে তাদের ওপর চাপিয়ে দিলে দলের অভ্যন্তরে আবারও নতুন গ্রুপিং অথবা পুরাতন গ্রুপিং প্রকাশ্য রূপ নিতে পারে। তবে সব কিছুই সময় বলে দেবে বলে মনে করেন জেলা আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা।

এদিকে, সারাদেশে জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও এ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির রাজনীতির মাঠে তেমন কোনো আলাপ আলোচনা নেই বললেই চলে। এ কারণে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও কাদা-ছোঁড়াছুঁড়ির দর্শক হিসেবেই সীমাবদ্ধ থাকছেন।

জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রীয় আওযামী লীগের কাছে ইতোমধ্যে ১০ জন প্রার্থী তাদের আবেদন জমা দিয়েছেন বলে দলের একাধিক সূত্রে নিশ্চিত করেছে।

মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হচ্ছেন- বর্তমান জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খান মোশারেফ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইসমাইল হোসেন মৃধা, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট মো. সুলতান আহমেদ মৃধা, দুমকি উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. হারুন অর রশিদ হাওলাদার, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান (ভিপি মন্নান), জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম সরোয়ার, পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর সিকদার, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খলিলুর রহমান মোহন।

দলীয় মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করার পর এসব নেতার অনেকেই ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের মাধ্যমে দলের হাই কমান্ডকে ম্যানেজ করার জোর তদবির করছেন।

এদিকে ১৫টি সদস্য ও ৫টি সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদের জন্য প্রায় ৩০ জন সম্ভাব্য প্রার্থী ঝৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। এসব প্রার্থী জেলা, উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের কাছে আলাপ আলোচনা করে নিজেকে যোগ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছেন।

পটুয়াখালী জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলার ৮০টি ইউনিয়নকে ১৫ টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ১০২৯ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৭৮৯ জন এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ২৪০জন।

ওয়ার্ড ভিত্তিক ভোটার হচ্ছে- ১নং সাধারণ ওয়ার্ডে ৮১ জন, ২নং ওয়ার্ডে ৬৫ জন, ৩নং ওয়ার্ডে ৬৮ জন, ৪নং ওয়ার্ডে ৮১ জন, ৫নং ওয়ার্ডে ৭৯ জন, ৬ নং ওয়ার্ডে ৬৫ জন, ৭নং ওয়ার্ডে ৬৬ জন, ৮নং ওয়ার্ডে ৫৫ জন, ৯ নং ওয়ার্ডে ৬৬ জন, ১০নং ওয়ার্ডে ৬৬ জন, ১১নং ওয়ার্ডে ৬৬ জন, ১২নং ওয়ার্ডে ৬৫ জন, ১৩নং ওয়ার্ডে ৬৬ জন, ১৪নং ওয়ার্ডে ৭৩ জন এবং ১৫ নং ওয়ার্ডে ৬৭ জন ভোটার।

তবে জেলার অনেক ইউনিয়নেই বিএনপি এমনকি জামায়াতের রাজনীতির সাথে যুক্ত এমন ব্যক্তিরা ইউনিয়ন পরিষদের (মেম্বার) সাধারণ সদস্য কিংবা সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য (মহিলা মেম্বার) নির্বাচিত হয়েছেন। কোনো কোনো ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত ব্যক্তিরা চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হয়েছে। তবে জেলা পরিষদ নির্বাচনে যেহেতু সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও মহিলা মেম্বররা ভোট দিবে সে ক্ষেত্রে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে অনেকের হিসেব নিকেশ পরিবর্তন হতে পারে বলেও মনে করছেন জেলার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন