সাভার: ছাত্র মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঢাকার পাশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সামনের সড়ক অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে। এতে আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন ছাত্র। এ ঘটনার জের ধরে শনিবার (২৭ মে) বিকেলে জাবি উপাচার্যের (ভিসি) বাসভবনে ভাঙচুর করে শিক্ষার্থীরা।
প্রধান ফটকের সামনে প্রায় ঘণ্টাখানেক অবস্থানের পরেও বাসভবন থেকে ভিসি বেরিয়ে না আসায় প্রধান দরজা ভেঙে ফেলে। এ সময় তারা জানালার কাচ, বাতি ভাঙচুর করেন ও সিসি ক্যামেরা খুলে দেন। শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন তারা।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২৬ মে) ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল-সংলগ্ন সিঅ্যান্ডবি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নাজমুল হাসান ও মেহেদি হাসান নামের জাবির দুই ছাত্র তাবলিগের দাওয়াত শেষে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবি, নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
এর ফলে মহাসড়কে পাঁচ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে এবং ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
বেলা একটার দিকে উপাচার্য ফারজানা ইসলাম, সহ-উপাচার্য মো. আবুল হোসেনসহ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তারা দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ প্রত্যাহার করা হবে না বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
পরে দুইটার দিকে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আরো কয়েকজন নেতা আন্দোলনকারী কয়েকজনকে চড়-থাপ্পড় মারেন বলে অভিযোগ ওঠে। এতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এর পরে তিনটার দিকে উপাচার্য আবারও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে যান। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাদের বিচারের দাবি করেন। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় খুললে বিচার করবেন বলে আশ্বাস দেন। কারণ, এখন গ্রীষ্মকালীন ছুটি চলছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তার কথায় আশ্বস্ত হননি।
এর প্রায় এক ঘণ্টা পর সাভার ও আশুলিয়া থানার পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে এবং লাঠিপেটা করে। এতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। এতে আহত হন সাংবাদিক হাফিজুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী অনামিকা নাগ, উদীচীর সাংগঠনিক সম্পাদক অয়নসহ সাত-আটজন।
আহত শিক্ষার্থীদের সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাফিজসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত আরো কয়েকজন সাংবাদিক অভিযোগ করেন, পরিচয় দেয়ার পরেও এক পুলিশ সদস্য হাফিজের পিঠে রাবার বুলেট ছোড়েন।
রাত গভীর হলেও শতাধিক শিক্ষার্থী ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান করে আছেন শিক্ষার্থীরা।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/প্রতিনিধি/আতা