শেরপুরে কর্মস্থলে থাকেন না ডাক্তারেরা!

  • নাহিদ আল মালেক, বগুড়া | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ১৯, ২০১৯, ০২:৩২ পিএম

বগুড়া : জেলার শেরপুর উপজেলায় জনসাধারণের সেবা দেবার জন্য উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে চাহিদার বিপরীতে এমনিতেই রয়েছে ডাক্তারের সংকট। তারপরও যে সমস্ত ডাক্তার কর্মরত রয়েছেন তারাও কর্মস্থলে থাকতে চান না। ফলে ডাক্তারের কর্মস্থলে অনুপস্থিতির দরুন কাংখিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাড়ে ৪ লাখ মানুষ।

জানা গেছে, শেরপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার সাড়ে ৪ লাখ মানুষের সেবা দেবার জন্য একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে ও ভবানীপুর ও সীমাবাড়ীতে দুটি ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে।

এছাড়া আরও ৪টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১ জন ও ইউনিয়নে ৬ জন সর্বমোট ১৭ জন ডাক্তার (এমবিবিএস চিকিৎসক) স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত থাকার কথা। নিয়মানুযায়ী কর্মরত এসব চিকিৎসকদের কর্মস্থলে থেকে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের নির্দেশিকা থাকলেও তা মানছেন না ডাক্তারেরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শেরপুর হাসপাতালে কর্মরত ড. মো. সাইফুল ইসলাম (মেডিক্যাল অফিসার আয়ুবের্দিক) প্রেষণে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ির ইউএইচসিতে গেছেন। খামারকান্দি ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা. শারমীন কবিরাজ প্রেষনে ঢাকার মুগদা জেনারেল হাসপাতালে গেছেন। ভবানীপুর ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কোন ডাক্তার বর্তমানে নেই। সীমাবাড়ী  ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার ডা. আলিয়া ফারজানা (কোড নং ১৩৪২২২) নিজ ইউনিয়নে দায়িত্ব পালন না করে উপজেলা হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু তিনি নিজ কর্মস্থলে থাকেন না।

ডেন্টাল সার্জন ডা. মো. আবু হাসান (কোড নং ১৩৫১০৭) হাসপাতালে বর্হিবিভাগে রোগী দেখেন। তিনিই একমাত্র ডাক্তার যিনি হাসপাতালের আবাসিক ভবনে বসবাস করেন। কিন্তু বর্হিবিভাগে রোগীদের তিনি খেজুরতলাস্থ তার ব্যক্তিগত চেম্বারে যেতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ আছে।

৩৩ তম বিসিএস এ নিয়োগ প্রাপ্ত ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী (কোড নং ১৩২৩৮৭) হাসপাতালে দুইএকদিন একটানা ডিউটি করেই সপ্তাহের অন্যান্য দিন ঢাকায় অবস্থান করেন। তিনি হাসপাতালের আবাসিক ভবন ব্যবহার করেন না।

এছাড়া ডা. মোছা মাহজাবীন আক্তার ও মোছা. নাজনিন আক্তারও তাদের কর্মস্থল শেরপুর উপজেলায় অবস্থান না করে অন্যত্র থেকে আসা যাওয়া করে নামমাত্র দায়িত্ব পালন করেন।

হাসপাতালের রোগীদের সার্বক্ষণিক দেখাশোনা, ঔষধ ও পথ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একজন আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) থাকার নিয়ম থাকলেও বর্তমানে ওই পদে কেউ নেই। ডা. মোছা. মোকছেদা খাতুন আরএমও হিসাবে যোগদান করলেও তিনি হাসপাতালের আরএমওর বাসভবনে অবস্থান করেন না এবং সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেন না। এছাড়া হাসপাতালের প্রশাসনিক দায়িত্বে নিয়োজিত ডা. আব্দুল কাদেরও হাসপাতালে অবস্থান করেন না। তিনি বগুড়া থেকে মাঝে মাঝে শেরপুরে যাতায়াত করেন মাত্র।

এ ব্যাপারে হাসপাতালে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মোকছেদা খাতুন জানান, আমি ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে আছি। তাই পুনার্ঙ্গ দায়িত্ব পালন করি না। তবে তিনি হাসপাতালে থাকেন না বলে স্বীকার করেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই