শিশু সাদকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিল বাবা!, লাশ দেখে জ্ঞান হারালেন মা

  • সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৬, ২০১৯, ০৯:১৫ পিএম
ছবি সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জ: দাম্পত্য বনিবনা না হওয়ায় স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় সাহিদা বেগমের। নাটাই সুতা ঘুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করে ছেলে সাদকে নিয়েই বেঁচে ছিল তিনি। দশ মাস আগে প্রতিবেশী রাজমিস্ত্রী ফরিদ (৩০) ‘র সাথে বিয়ে হয় সাহিদার। কিন্তু সৎ ছেলেকে সহ্য করতে পারতো না দ্বিতীয় স্বামী। একদিন সেই ছেলেকে নিয়ে হাটে যায় সৎ বাবা। তারপর নিখোঁজ। শনিবার উদ্ধার হওয়া অর্ধগলিত শিশুই সাদ।  

শিশুটি একই জেলার বেলকুচি উপজেলার ভাঙাবাড়ি ইউনিয়নের চন্দনগাতী গ্রামের আসাদুল ইসলাম ও সাহিদা বেগমের ছেলে শাহাদত হোসেন সাদ (৭)। আর এই ঘটনার মূলহোতা হিসেবে শিশুটির সৎ পিতা মনিরুল ইসলাম (৩০) কেই সন্দেহ করছে পুলিশ ও মৃত শিশুটির পরিবার।

গতকাল লাশ উদ্ধারের পরে শাহজাদপুর থানা থেকে বিভিন্ন থানায় খোঁজ করে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী বেলকুচি উপজেলায় ৭ বছর বয়সী একটি শিশু নিখোঁজ আছে। পরবর্তীতে নিখোঁজ শিশুটির মা সাহিদা বেগম ও পরিবারের লোকজন শাহজাদপুর থানায় এসে সনাক্ত করে, শিশুটির পরনের পোশাক দেখে তার মা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

শাহজাদপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ফাহমিদা হক শেলী জানান, মৃত শিশুটির বাবা মা’র অনেক আগেই ছাড়াছাড়ি হয়েছে। ৮/৯ বছর পূর্বে একই গ্রামের আসাদুল ইসলামের সাথে তার বিয়ে হয়েছিল, সেই ঘরে জন্ম নেয় পুত্র শফিকুল ইসলাম সাদ। দাম্পত্য বনিবনা না হওয়ায় স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় তার। নাটাই সুতা ঘুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করে ছেলে সাদকে নিয়েই বেঁচে ছিল সাহিদা বেগম।

দশ মাস আগে প্রতিবেশী রাজমিস্ত্রী ফরিদ (৩০) ‘র সাথে বিয়ে হয় সাহিদা বেগমের। অলস প্রকৃতির ফরিদ ঠিক মতো কাজ করতোনা, সাহিদা বেগমই সুতার কাজ করে সংসার চালাতো।

সাহিদা বেগম জানান, বিয়ের পর থেকেই আমার ছেলে সাদ’কে সহ্য করতে পারতো না, আমি তার রক্তচক্ষু থেকে আমার বুকের ধনকে আগলেই রাখতাম। গত ১৯ তারিখে হাটে সদাই করতে যাবে বলে সাদ’কে তেরি করে দিতে বলছিল। আমি সাদ’র পছন্দের জিন্সের ফুলপ্যান্ট আর সাদা ফিরোজা, নীলের চেক গেঞ্জি বের করে দিলাম। ফরিদই ওরে পোশাক পরালো। তারপর সেইদিন থেকেই ফরিদ আর শফিক দুজনেই নিখোঁজ।

শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান জানান, এই বিষয়ে গতকাল থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। আজ রবিবার শিশুটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই