হিলি হাসপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়া, শ্বাস কষ্টের রোগীর সংখ্যা

  • হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২৪, ১২:৩৩ পিএম
ছবি : প্রতিনিধি

দিনাজপুর: তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে উত্তরাঞ্চল দিনাজপুরের হিলি হাসপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়ার, জ্বর, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগীর সংখ্যা । টানা কয়েক দিনের গরমে ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশু, বৃদ্ধসহ নানা বয়সের মানুষ। এ ছাড়া প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৩০০ থেকে ৪০০জন রোগী আসছে চিকিৎসা নিতে।

এদের মধ্যে ডায়রিয়া ও শ্বাষকষ্টের রোগীর সংখ্যাই বেশি। প্রতিদিন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন সাতজনের মতো। তবে রোগীদের অভিযোগ, খাবার স্যালাইন পেলেও কলেরা স্যালাইন কিনতে হচ্ছে বাহির থেকে। এছাড়াও নার্সদের ঠিকমতো সেবা পাচ্ছেন না তারা, এমনকি তাদের সঙ্গে খারাপ আচরনও করা হচ্ছে। এদিকে ডায়রিয়া রোগীদের নানা ধরনের পরামর্শ ও চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা বলছেন কতৃপক্ষ।

[222180]

হাকিমপুর সাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার কামরুন্নাহার আজাদী রিয়া বলেন, দিনাজপুরের হিলিতে গত কয়েকদিন থেকে অতি তাপদাহের কারনে তীব্র গরম পড়েছে। সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত সূর্যের প্রখর তাপের কারণে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। প্রচন্ড গরমে অনেকেই ডায়রিয়া, জ্বরসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ অবস্থায় চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভিড় করছেন এসব রোগী। অনেকে আউটডোরে চিকিৎসক দেখিয়ে বাড়ি ফিরলেও কারো কারো অবস্থা খারাপ হওয়ায় ভর্তি হতে হচ্ছে হাসপাতালে। বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকছেন বলে জানিয়েছে তিনি।

তবে তিনি আরও বলেন , এই গরমে বেশি করে পানি পান করতে হবে। তরল খাবার খেতে হবে। সেই সঙ্গে বাইরের খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

সুফিয়া নামের এক ডায়রিয়া রোগী বলেন, কয়েকদিন থেকে হিলিতে অতি তাপদাহের কারনে গরমে আমার ডায়রিয়া শুরু হয়েছে। আজকে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। তবে শুধু খাবার স্যালাইন দিচ্ছে হাসপাতাল থেকে, কলেরার স্যালাইন কিনতে হচ্ছে বাহির থেকে। 

রহিমা নামের এক শিশুর মা বলেন, আমার শিশু কয়েকদিন থেকে জ্বর ও ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছে। তাই কালকে এই হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি কিন্তু আমার শিশুর জ্বর কমতেছেনা। স্যালাইন দিয়েছে ডাক্তার, তবে সেই স্যালাইন যেকোন ভাবে খুলে গেলে আমি নার্চদের ডাকি স্যালাইন লাগানোর জন্য কিন্তু তারা না এসে আমার সাথে খারাপ আচরন করছে আর বলতেছে আপনি যতবার খুলবেন আর আমরা ততবার লাগাই দিব।

আরও কয়েকজন রোগীদের অভিযোগ, খাবার স্যালাইন হাসপাতাল থেকে পেলেও কলেরা স্যালাইন কিনতে হচ্ছে বাহির থেকে। এছাড়াও নার্সদের দুর-ব্যবহারের শিকার হচ্ছেন তারা। প্রয়োজনে তাদের ডাকলে সাড়া পাচ্ছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

তবে রোগীদের সাথে খারাপ আচরনের বিষয় নিয়ে কথা বলতে গেলে নার্সদের সুপাভাইজার কোন কথা বলতে রাজি নন।

এদিকে উপজেলা সাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ইলতুতমিশ আকন্দ বলেন, তাপদাহের করানে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাস কষ্টে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা। রোগীর বাড়তি চাপের কারণে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় বেশি বেশি তরল খাবার খেতে ও বাইরের খোলা খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। এদিকে রোগীদের সাথে এমন আচরনের অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস কতৃপক্ষের।

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যমতে, হাকিমপুর উপজেলা সাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাতদিনে অ্যাজমা, শ্বাষকষ্ট, পেটের ব্যাথা ও ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন ৭৩ জন।

এসআই/এসআই