ঢাকা: নির্ধারিত সময়ে সম্পদ বিবরণী জমা না দেওয়ার অভিযোগে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান এবং তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) মামলা অনুমোদনের বিষয়টি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম।
দুদক জানায়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৬(২) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
২০২৪ সালের ৬ জুন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় শেখ হাসিনার প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পান দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার এমিরিটাস সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান। তবে ওই বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান এবং পরবর্তীতে তার পরিচালিত পত্রিকাগুলোর কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন।
গত জানুয়ারিতে নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অনুসন্ধানের সময় তাদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিস পাঠানো হয়, কিন্তু তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা জমা দেননি।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রতিবেদনে বলা হয়, নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের নামে ১৬৩টি ব্যাংক হিসাব পাওয়া গেছে। এসব হিসাবে প্রায় ৩৮৬ কোটি টাকা জমা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৭৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা তোলা হয়েছে। বর্তমানে এসব হিসাবে রয়েছে ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
নাঈমুল ইসলাম খানের নামে এককভাবে ৯১টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। ১৯৯০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত এসব হিসাবে ২৩৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা জমা হয় এবং ২৩৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা তোলা হয়। এখন এসব হিসাবে রয়েছে ৬৪ লাখ টাকা।
তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির নামে ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ১৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা জমা হয়েছে, যার মধ্যে ১৩ কোটি টাকা তোলা হয়েছে। এসব লেনদেন হয়েছে ২০০৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত।
এ ছাড়া নাঈমুল ইসলাম খানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ৪৬টি ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা জমা হয়েছে। বর্তমানে এসব হিসাবে রয়েছে মাত্র ২১ লাখ টাকা।
দুদক সূত্র জানায়, তাদের পরিবার ১২টি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতেন, যার সর্বমোট সীমা ছিল প্রায় ২৮ লাখ টাকা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ২৫ আগস্ট নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে তার আগেই তারা বেশিরভাগ অর্থ তুলে নিয়েছিলেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
এসএইচ