জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির সংগঠক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে এখন পর্যন্ত অগ্রগতি তুলে ধরতে আজ একটি সমন্বিত সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। এতে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেবেন।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা যৌথভাবে তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা, গ্রেপ্তারকৃতদের তথ্য এবং প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করবে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হাদি ঢাকা–৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। প্রচারণা শেষে ফেরার পথে তাকে গুলি করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে র্যাব আটজনকে আটক করেছে। তারা হলেন— প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা হুমায়ুন কবির, মা হাসি বেগম, স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ শিপু, বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা, সহযোগী মো. কবির (দাঁতভাঙা কবির), মো. ফয়সাল এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নান।
অন্যদিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে লোক পারাপারের সঙ্গে জড়িত সঞ্জয় চিসিম, সিবিয়ন দিও এবং প্রধান আসামিকে পালাতে সহায়তাকারী মো. নুরুজ্জামান নোমানীকে। মামলার তদন্তে দুই গাড়িচালককে সাক্ষী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাটি প্রথমে হত্যাচেষ্টা হিসেবে রুজু হলেও শনিবার আদালত সেটিকে হত্যা মামলা হিসেবে তদন্তের নির্দেশ দেন।
এর আগে, গত ১৪ ডিসেম্বর রাতে পল্টন থানায় ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহারে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ফয়সাল করিম মাসুদসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে রিকশায় থাকা অবস্থায় মোটরসাইকেলে আসা এক ব্যক্তি হাদির মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলে ছয় দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর থেকে হাদির মরদেহ দেশে আনা হয়। পরদিন শনিবার দুপুর ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তাঁর বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিকের ইমামতিতে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজা শেষে বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হলে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধি চত্বরে হাদির দাফন সম্পন্ন করা হয়।
এম