ক্রেতা কম, সরবরাহ স্বাভাবিক তবু কমেনি দ্রব্যমূল্য

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২০, ১২:৫৫ এএম

ঢাকা : রাজধানীর বাজারগুলো অনেকটা সুনসান। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ক্রেতা খুব একটা নেই, তাই সরবরাহও প্রয়োজনের তুলনায় বেশি। তবু কমেনি দ্রব্যমূল্য। করোনা ভাইরাসের আতঙ্ককে পুঁজি করে এখনো বাজারে বাজারে চলছে রমরমা ব্যবসা।

শুক্রবার (২৭ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের এমন চিত্র ছিল। করোনার অঘোষিত লকডাউনের গতকাল ছিল প্রথম শুক্রবার। তবে বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেল অন্যান্য শুক্রবারের চেয়ে চেহারাটা একেবারেই ভিন্ন। কারণ টানা বন্ধের কারণে মানুষ এখন দিনক্ষণ গুনে বাজারে আসছে না। নেহায়েত প্রয়োজন হলেই আসবেন, এমনই ভাবছেন অধিকাংশরা।

তবে এর পরেও কমেনি চাল, ডাল, আটা, তেল, রসুনসহ বেড়ে যাওয়া অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম। ক্রেতা কম থাকলেও সরবরাহ ঘাটতির কথা বলে যাচ্ছেন বিক্রেতারা। আবার অনেকে অজুহাত দেখাচ্ছেন, কম ক্রেতারাই মজুদের জন্য এখনো বেশি বেশি কিনছেন।

রামপুরা বাজারে সকাল ৯টায় খুব বেশি মানুষের আনাগোনা দেখা যায়নি। যারা এসেছিলেন তারাও বেশি ঘোরাঘুরি না করে চটজলদি বাজার করে ঘরে ফিরেছেন। তবে কিছু মানুষকে এক-দেড় সপ্তাহের কাঁচাবাজার করতে দেখা গেছে। তবে তেমন মানুষের সংখ্যা হাতেগোনা।

এমন এক ক্রেতা রিয়াজুল ইসলাম বলেন, বেশি কিনছি কারণ যাতে আর ঘর থেকে বের হতে না হয়। আশপাশের অনেকে একবারে কেনাকাটা শেষ করেছেন তারা আর বাইরে বের হচ্ছেন না। তাই আমিও বেশি কিনলাম। কারণ ঘর থেকে বের হওয়াটা এখন অনেক বেশি ঝুঁকি।

অন্যদিকে বাজারে এখনো বন্ধ হয়নি চাল নিয়ে ব্যবসায়ীদের চালবাজি। এর মধ্যেও বাজারে নাজির শাইল, মিনিকেট, পাইজাম, স্বর্ণা চাল প্রতি বস্তায় ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা যায়। চাল বিক্রেতা মামুন বলেন, মিল মালিকেরা ও আড়তদাররা চালের দাম এখনো কমায়নি। তাই পাইকারি ও খুচরা বাজারে দাম বেশি। অর্ডার দিয়েও চাল মিলছে না।

এমন অবস্থায় খুুচরায় ৫ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি চাল। এসব বাজারে কেজিতে ৮ টাকা বেড়ে মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি, মিনিকেট পুরান ৬২ টাকা, বাসমতি ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা, কেজিতে ৬ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা, কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে এক সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা এবং মোটা পাইজাম ৪২ টাকা দরে।

তবে মসলার বাজারে দেশি আদা ও পেঁয়াজের দাম ২০ থেকে ৪০ টাকা কমেছে। উল্টোদিকে নতুন করে বেড়েছে শুকনোমরিচ ও দেশি হলুদের দাম। মানভেদে এক কেজি হলুদের দাম পড়ছে ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা। শুকনোমরিচ ২৮০ থেকে ৩৬০ টাকা। তবে পেঁয়াজের দাম ৫০ টাকার মধ্যে রয়েছে।

বাজারে এখন কোনো সবজিরই ঘাটতি নেই, কারণ ক্রেতা কম। তবে প্রতিটি পদের সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ২০ টাকা বেশি। কোনো কোনো সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ৩০ টাকা বেড়েছে। মোট কথায় ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি মেলানো দুরূহ হয়ে পড়েছে।

একই অবস্থা শাকের ক্ষেত্রেও। বাজারে প্রতি আঁটিতে (মোড়া) তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়ে এখন কচুশাক ১২ থেকে ১৫ টাকা, লালশাক ১৫ টাকা, মূলাশাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, পালংশাক ১৫ টাকা থেকে ২০, লাউ ও কুমড়াশাক ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

তবে গরুর মাংস ছাড়া দাম বাড়েনি অন্যান্য মাংসের। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। যা অন্য সময় ৫৮০ টাকা ছিল। এ ছাড়া প্রতি কেজি ব্রয়লার ১০ টাকা কমে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা, লেয়ার ২০০ টাকা থেকে ২১০ টাকা, সাদা লেয়ার ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, সোনালি ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হতে দেখা যায়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই