করোনায় বিনিয়োগ স্থবিরতা কাটাতে বানিজ্য নীতিমালা সংস্কারের পরামর্শ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২০, ০৯:০৩ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: চলমান করোনা সঙ্কটে বিনিয়োগ স্থবিরতা দূরীকরণে দ্রুত নতুন নীতিমালা প্রণয়নসহ প্রয়োজনীয় বানিজ্য নীতিমালা সংস্কার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন দেশের ব্যবসায়ী নেতারা। 

রোববার (১২ জুলাই) রিসারজেন্ট বাংলাদেশ আয়োজিত তৃতীয় সংলাপ ‘‘অনিশ্চিত সময়ে বেসরকারি বিনিয়োগ : বাংলাদেশে কোভিডের প্রভাব এবং নীতিমালার প্রয়োগ”  শীর্ষক সংলাপে তারা এ মতামত দেন। 

আলোচনাটি জুম’র মাধ্যমে আয়োজিত হয়। রিজারজেন্ট বাংলাদেশ এমসিসিআই, ডিসিসিআই, চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেজ্ঞ, বিল্ড এবং পলিসি এক্সচেজ্ঞের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত একটি উদ্যোগ।

পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. মাসরুর রিয়াজ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি কোভিড পরবর্তী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশ্বে শিল্প উৎপাদন খাতে যে পরিবর্তন এসেছে, বিনিয়োগকারীদের অগ্রাধিকার যাচাই এবং তাঁদের দৃষ্টিতে ভবিষৎ বিনিয়োগ পরিস্থিতি, সুযোগ, সংশ্লিষ্ট নীতি কাঠামো ইত্যাদি বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়ার বিষয়ে জোরারোপ করেন। 

এ অবস্থা থেকে অর্থনৈতিক উত্তোরণের জন্য বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষনের কোন বিকল্প নেই বলে তিনি জানান।  

এমসিসিআই সভাপতি ব্যরিস্টার নিহাদ কবির আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন। চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম কোভিড থেকে উত্তোরণের জন্য, ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন লক্ষমাত্রা বাস্তবায়নে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন।

এপেক্স ফুটওয়্যার এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর কাস্টমস ও লজিস্টিক বিষয়সমূহের দূর্বলতাসমূহ সমাধান, বৈদেশিক মুদ্রা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, স্থানীয় ও বিদেশি বেসরকারি বিনিয়োগকারিদের বিনিয়োগের আহ্বানের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার পরামর্শ প্রদান করেন।

ইউনিলিভার বাংলাদেশ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও কাদের লেলে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক বানিজ্যের সুযোগ সুবিধা গ্রহণের উপর ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা খুজে বের করার উপর জোর প্রদান করেন। 

গ্রামীন ফোনের সিইও ইয়াসের আজমান বলেন, সামগ্রিক নীতি কাঠামোর সংস্কার ও দীর্ঘমেয়াদি কর কাঠামো ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বেপজা এর নির্বাহি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল সালাউদ্দিন ইসলাম বলেন প্রণোদনা এবং প্রতিযোগী শ্রমবাজার বাংলাদেশে বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষনে সাহায্য করবে।

বিডা এর নির্বাহি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন সরকার খেলাপী ঋণ হ্রাস ও কাস্টমস আইন যুগোপযুগীকরণের ক্ষেত্রে যথাযথ নীতি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তিনি আরও বলেন প্রযুক্তিতে উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহের যথাযথ সমন্বয়ের মাধ্যমে বিনিয়োগকারিদের ওয়ান স্পট সার্ভিসের সুবিধা আরও সুন্দরভাবে প্রদান করা যাবে।   

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূইয়া নীতি নির্ধারকদের সাথে ব্যবসায়ী মহলের নিয়মিত আলোচনার উপর গুরুত্বারোপ করেন। এনবিআর এর আরও একজন সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন কৌশল যথা ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এনবিআর ও কর কাঠামের আধুনিকায়নের পরামর্শ প্রদান করেন।

বিল্ড চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান চীন ও ভারতের বিশাল বাজারের সুবিধা গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করেন। স্প্যানিশ চেম্বারের সভাপতি নুরিয়া লোপেজ, ফরেন চেম্বারের নির্বাহি পরিচালক নূরুল কবির, ইকোনমিক রিপোটার্স ফোরামের সেক্রেটারি জেনারেল রাশিদুল ইসলাম অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য প্রদান করেন।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষনের সাথে যে সকল সরকারি সংস্থাসমূহ জড়িত তাঁরা যেন আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের সার্বিক সহায়তা প্রদান করে ও কোনরকম হয়রানি না করে সে বিষয়ে নজরদারি জোরদার করতে হবে। শুধুমাত্র বিদেশি বিনিয়োগই নয়, স্থানীয় বিনিয়োগ আকর্ষনেও সম্ভব সকল কিছু করতে তিনি সরকারের সহায়তা কামনা করেন।

সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নাহিম রাজ্জাক বলেন, বানিজ্য ও বিনিয়োগকে উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে একটি সুনির্দিষ্ট ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এলএ/এমএএইচ