চীন-বাংলাদেশ ১৩৬০ কোটি টাকার বাণিজ্য চুক্তি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক  | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০১৬, ০৮:১০ পিএম

চীনের ১৫টি কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ১৩.৬ বিলিয়ন (১ হাজার ৩’শ ৬০ কোটি ডলারের) ১৯টি চুক্তি সই হয়েছে। শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) বিকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে  বাংলাদেশ-চায়না বিজনেস ফোরামের যৌথ বৈঠকে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে এ চুক্তি সই হয়।

ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং চায়না কাউন্সিল ফর দ্য প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড (সিসিপিআইটি) যৌথভাবে এ বৈঠকের আয়োজন করে।

দুপুরে বিজনেস ফোরামের বৈঠক শুরু হয়। এতে উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা বক্তব্য রাখেন। এসময় উভয় দেশের পক্ষ থেকে ব্যবসা-সংক্রান্ত প্রেজেন্টেশনে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে মত বিনিময় করেন।

বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েত উল্লাহ আল মামুনের উপস্থিতে বাংলাদেশে চীনের ১৫টি কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশের ১৫টি কোম্পানির মধ্যে ১৩.৬ বিলিয়ন ডলারের ১৯টি চুক্তি সই হয়েছে। এখানে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ওষুধ, সিরামিক, লেদার খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনার বিষয়টি তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা।

বৈঠকে বক্তব্য রাখেন, এফবিসিসিআইর সভাপতি মাতলুব আহমাদ, সিসিপিআইটির ভাইস চেয়ারম্যান চ্যান ঝউ, ইনসেপ্টা ফার্মাসিটিক্যালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবদুল মুক্তাদির, অ্যাপিলিয়ন গ্রুপের রেজাউল কবির, চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের প্রেসিডেন্ট ওয়াং জু শেং, টিবিয়ান ইলেকট্রিক অ্যাপারেটর কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ঝাওয়াংশি।

মাতলুব আহমেদ বলেন, যদিও উভয় দেশের মধ্যে ১৯টি চুক্তি সই হয়েছে। তারপরও আশা করছি, পরবর্তীতে এ সংখ্যা বেড়ে ৫০টির মতো হতে পারে।  তিনি আরও বলেন, চীনের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে নিশ্চই লাভবান হবেন। আমরা আশাবাদী, যদি উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে ৫০টি চুক্তি সই হয় তাহলে তার পরিমাণ কয়েক বিলিয়ন ডলার দাঁড়াবে। এ ছাড়া সরকারি উদ্যোগে তো আলাদা চুক্তি হচ্ছেই।’

চীনা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমান (বিসিআইএম) ও সিল্ক রুটের আওতায় চীনের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের এ সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও দরিদ্র বিমোচনে ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যকার এ বাণিজ্য চুক্তিগুলো বিরাট সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আমার বিশ্বাস, চীনের ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের উত্তম স্থান হিসেবে বাংলাদেশকেই বেছে নেবেন।’

সিসিপিআইটির ভাইস চেয়ারম্যান চ্যান ঝহু বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাংলাদেশ এশিয়া মহাদেশে বিনিয়োগ ব্যাংকের মধ্যেই রয়েছে। আমরা আস্থা নিয়ে এ দেশের বিনিয়োগ পার্কে বিনিয়োগ করব। আমাদেরই এই প্রতিনিধি দলে অনেক উদ্যোক্তা রয়েছেন। যারা এদেশে বিনিয়োগ করতে চান। চামড়া, অবকাঠামো, তৈরি পোশাক, ওষুধ, অটোমোবাইলসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের কথা চিন্তা করছি আমরা। চীনের অর্থায়নে বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্য চীনে রফতানি করে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য বৈষম্য দূর করা সম্ভব।’

উল্লেখ্য, দুই দিনের সফরে ঢাকা পৌঁছেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) ১১ টা ৩৬ মিনিটে তিনি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-কে অভ্যার্থনা জানিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। পরে তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার দেয়া হয়েছে।

শি জিনপিংকে বহনকারী এয়ার চায়নার স্পেশাল ভিভিআইপি ফ্লাইট ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৩৬ মিনিটে। সেখানে তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের  সঙ্গে ৮৬ সদস্যের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলও রয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম