ঢাকা : দেশের বেসরকারি খাতে ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের ছাঁটাই ও পর্যবেক্ষণে রাখাকে ঘিরে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। তবে শুধুমাত্র চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার জন্য পরীক্ষা নেওয়া অনৈতিক হলেও পদোন্নতি ও যোগ্যতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে পরীক্ষা গ্রহণ যৌক্তিক বলে জানায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের বলেন, কেবল চাকরিচ্যুত করার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা নেওয়া অন্যায়। তবে মেধা যাচাই ও পদোন্নতির জন্য পরীক্ষা গ্রহণ করা সঠিক পদ্ধতি। যাদের চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হবে, তাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।
অন্যদিকে ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) কামাল উদ্দীন জসিম জানান, অতীতে অনিয়মের মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক কর্মী নিয়োগ পেয়েছিলেন। তখন কোনো বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই শুধু সিভি জমা দিয়েই চাকরি পাওয়া গেছে। এজন্য মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে অযোগ্যদের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে।
ব্যাংকের নথি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অবৈধ নিয়োগ পাওয়া এসব কর্মীর পেছনে প্রতিবছর খরচ হয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত বেতন-ভাতায় খরচ হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ অর্থ আইনগতভাবে বৈধ নয়; তাই ফেরত পেতে আদালতের দ্বারস্থ হওয়া যেতে পারে।
গত দুদিনে প্রায় ২০০ কর্মকর্তা ছাঁটাই করেছে ইসলামী ব্যাংক। আরও ৪ হাজার ৭৭১ জনকে রাখা হয়েছে বিশেষ পর্যবেক্ষণাধীন (ওএসডি) তালিকায়। তারা বেতন-ভাতা পাবেন, তবে কোনো দায়িত্ব বা কাজ থাকবে না। ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এসব নিয়োগের বড় অংশই হয়েছিল চট্টগ্রামের পটিয়া এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে।
ছাঁটাই, ওএসডি ও আন্দোলন সব মিলিয়ে ইসলামী ব্যাংকে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে।
এএইচ/পিএস