ফের অনিয়ম-সহিংসতা নির্বাচনে

নির্বিঘ্ন করুন বাকি ধাপগুলো

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ৮, ২০১৬, ০৫:০৬ পিএম

চতুর্থ ধাপে গতকাল আরো ৭০৩টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগের তিন ধাপের মতোই বেশ কিছু স্থান থেকে সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। দিনের শুরুতেই কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় তাপসচন্দ্র দাস (২৩) নামে এক যুবককে ভোটকেন্দ্রের সামনেই কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

এ ছাড়া ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার আগেই ব্যালট পেপারে সিল মারা, ব্যালট ছিনতাইসহ কারচুপির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগে দুজন প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে আটক ও একজনকে প্রত্যাহার করার খবর পাওয়া গেছে। ফেনীর ছাগলনাইয়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই প্রার্থীর সমর্থকরা ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, জামালপুর, চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকেও।

অনিয়মের অভিযোগ তুলে কিছু প্রার্থী নির্বাচন বর্জনেরও ঘোষণা দিয়েছেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, সংঘাত-সহিংসতামুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন দেখার জন্য জনমনে যে প্রত্যাশা ছিল, তা আবারও হোঁচট খেয়েছে। অতীতেও দেখা গেছে, স্থানীয় পর্যায়ে যত নির্বাচন হয়, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংঘাত-সহিংসতা দেখা যায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে। যত দিন যাচ্ছে ততই সংঘাতপূর্ণ হচ্ছে এই নির্বাচন। তার মধ্যে এবারই প্রথম রাজনৈতিক দলের মনোনয়নে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন। তাই এবার নির্বাচনে রাজনৈতিক সহিংসতাও যুক্ত হয়েছে। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, প্রথম তিন ধাপের নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আগে ও পরে মিলিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৭৩ জন। আহত হয়েছেন আরো বেশি। চতুর্থ ধাপ শেষে এই সংখ্যা কত হবে, তা আমরা জানি না। কেন এই মৃত্যুর প্রতিযোগিতা?

এবারের ইউপি নির্বাচন যে অনেক বেশি সহিংস হবে, তা নির্বাচন কমিশনের অজানা থাকার কথা নয়। গণমাধ্যমে অনেক আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছে এবং নির্বাচন কমিশনকে করণীয় সম্পর্কে অনেক পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। জানা যায়, গোয়েন্দা তথ্যেও একই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশন কি পেরেছে পরিস্থিতি মোকাবিলায় যথাযথ পদক্ষেপ নিতে? গতকালের ভোটগ্রহণের মধ্য পর্যায়ে নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ দাবি করেছেন, চতুর্থ ধাপের নির্বাচন তুলনামূলক ভালো হয়েছে। আগের ধাপেও নির্বাচন কমিশন থেকে একই ধরনের বক্তব্য দেওয়া হয়েছিল। তুলনামূলক ভালো বলে তাঁরা কী বোঝাতে চান, তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। কম মানুষ মারা গেছে? কম কেন্দ্রে সহিংসতা হয়েছে? কম কারচুপি হয়েছে? এসবের সঙ্গে ‘ভালো’ শব্দটি যোগ করার কি কোনো সুযোগ আছে? আমরা নির্বাচন কমিশনের আত্মতুষ্টি শুনতে আগ্রহী নই। আমরা চাই, তারা আরো বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে এবং সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করবে।

পাশাপাশি নির্বাচনের পরবর্তী ধাপগুলোতে যেন সংঘাত-সহিংসতা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা যায়, সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই