তোমরা যারা কানে ধরেছো

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৬, ২০১৬, ০৪:৩২ পিএম

একদা আমিও সন্তানের পিতা হব। শুধু আমার কেন, যারা এ প্রজন্মের তারা সবাই বাবা-মা হবে। এজন্য ভাবতেছি শিক্ষা পদ্ধতিতে কিছুটা পরিবর্তন আনব। কেননা সন্তানকে সুশিক্ষা দেয়া তো প্রত্যেক অভিভাবকের দায়িত্ব। এই এখন যেমন স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীর সাক্ষাৎকার নিয়ে স্কুলে ভর্তি নেয়-কেবল এই ব্যবস্থার পরিবর্তন।

আগামীর দিনগুলোতে শিক্ষার্থীরা ভর্তির জন্য কোন পরীক্ষা দেবে না। বরং অভিভাবকরা শুধু শিক্ষকদের পরীক্ষা নিয়ে তারপর তাদের সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করবে। পরীক্ষা বোর্ডে প্রশ্ন থাকবে, ভক্তের ভক্ত হয়ে ২০১৬ সালে আপনি কি কান ধরে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন? শিক্ষকের উত্তর যদি না’বোধক হয় তবে তার কাছে সন্তানকে শিক্ষা গ্রহনের জন্য দেয়া যাবে। আর শিক্ষক যদি হ্যা-বাচক উত্তর দেয় তবে কোন অবস্থাতেই তাদের কাছে সন্তানকে শিক্ষার জন্য অর্পণ করা যাবে না। কেননা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কানধরা একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীর সামনে কোন মুখে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে। যারা কান ধরে রাস্তায় দাঁড়াতে পারে, তাদের নিজেদের তো কোন লজ্জা নাই, কাজেই তাদের কাছে সন্তানকে শিক্ষা গ্রহনের জন্য দিলে সে সন্তানও নিঃসন্দেহে নির্লজ্জ হবে।
শিক্ষকের অপমান আমরা মানতে পারি না। যারা শিক্ষককে কান ধরিয়েছে, তারা নিশ্চয়ই আইনে হাতে তুলে নেয়ার অপরাধ। কিন্তু সেই অপরাধের প্রতিবাদে আরও কতগুলো অপরাধের জন্মা দিতে হবে কেন? শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষায় কিংবা তাদের প্রতি ভালোবাসায় যদি প্রতিবাদ জানাতেই হয়, তবে কি তার জন্য অন্য কোন বৈকল্পিক প্রতিবাদ ছিল না? ক্লাস বর্জন, রাস্তায় প্রতিবাদ, শিক্ষাভবন অবরোধ, স্মারকলিপি প্রদানসহ আরও কতধরণের প্রতিবাদের মাধ্যম আছে। এসব কিছু বাদ দিয়ে দলে দলে কান ধরা শিক্ষকদের অশিক্ষক সূলভ আচরণই প্রকাশ করেছে।
শিক্ষার্থীদের সামনে, মিডিয়ার সামনে, দেশবাসীর সামনে, স্ত্রী-সন্তানের সামেনে স্বহস্তে স্বকান ধরে দাঁড়াতে একটুও লজ্জা করলো না? শিক্ষক যদি অশিক্ষিতের মত আচরণ করে, তবে তাদের দ্বারা এ জাতি কি আশা করতে পারে? শিক্ষকের প্রতি টান যদি উথলায় তবে সেটা কেবল একজন শিক্ষকের মায়ায় কেন? দেশে অন্য শিক্ষকরাও যে নিত্যদিন নির্য্যাতিত হচ্ছে তা নিয়ে তো কারও কোন প্রতিবাদ দেখছি না। ভক্তের ভক্তরা কি এ রহস্যের জটটা একটুখানি উম্মোচিত করে জাতিকে চিন্তামুক্ত করবেন?

সোনালীনিউজ/ঢাকা