চিকিৎসার নামে কী হচ্ছে

তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০১৬, ১০:২৮ এএম

চিকিৎসার নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার অভিযোগ নতুন নয়। মাদকাসক্তি নিরাময়ের নামেও অনেক চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান গজিয়ে উঠেছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। দেশের এক হাজার ২০০টি মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রের মাত্র ১৮০টির অনুমোদন রয়েছে। অনুমোদনহীন বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোও মাদকাসক্তি নিরাময়ের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন সেবা দিচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বেশ কয়টির বিরুদ্ধে চিকিৎসার নামে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। গত দেড় বছরে এসব নিরাময়কেন্দ্রে ৯ জনের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর একটি মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রে একজনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, সেখানে ভর্তি ওই রোগী পালাতে গিয়ে নিচে পড়ে মারা যায়।

আমাদের দেশে যেসব মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসনকেন্দ্র বেসরকারি পর্যায়ে পরিচালিত হচ্ছে, তার কোনোটিই আন্তর্জাতিক মানের নয়। যেসব ভবনে এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে তার কোনোটিই পুনর্বাসনের উপযুক্ত নয়। মাদকাসক্ত কোনো ব্যক্তির চিকিৎসার পর তার পুনর্বাসনের জন্য যে পরিবেশ প্রয়োজন হয়, তা এসব কেন্দ্রে নেই। মাদকাসক্ত কোনো ব্যক্তি মাদকমুক্ত হওয়ার পর তাকে নতুন জীবনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে হয়। প্রতিদিনের জীবনব্যবস্থার সঙ্গে অভ্যস্ত করে তুলতে হয়। তার জন্য একটি পুনর্বাসনকেন্দ্রের যে পরিসর প্রয়োজন, যে সুযোগ ও সুবিধার দরকার, তা কোনো পুনর্বাসনকেন্দ্রের নেই। অধিকাংশ নিরাময়কেন্দ্রে কোনো চিকিৎসক নেই। নেই প্রশিক্ষিত নার্স। ফলে এখানে চিকিৎসার নামে যা হয়, তাকে এক অর্থে অপচিকিৎসা বলা যেতে পারে। 

একুশ শতকের বাংলাদেশে এখনো এই অপচিকিৎসা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চলছে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। মাদকাসক্তি আজকের দিনে সমাজের একটি বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত। এই আসক্তি থেকে নিরাময় ও পুনর্বাসনের বিষয়টিও জরুরি ভিত্তিতে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে এ ব্যাপারে সক্রিয় হতে হবে। চিকিৎসার নামে নির্যাতন মেনে নেওয়া যায় না।

আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশেও অনেক মেধাবী চিকিৎসক আছেন। তাঁদের পরামর্শ নিয়ে মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনা সম্ভব। আমরা আশা করব, মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসনের নামে ব্যবসা বন্ধ হবে। মাদকাসক্তদের প্রকৃত চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা