বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব সুসংহত করতে হবে

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০১৬, ০১:১৬ পিএম

বিশ্ববাসীর দৃষ্টি এখন বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের দিকে। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রত্যাশা মরক্কোয় অনুষ্ঠানরত এ সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্ত জলবায়ু অভিঘাত নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ এক অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু অভিবাসী সমস্যা সমাধানে বৈশ্বিক উদ্যোগে জোর দিয়েছেন। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব সুসংহত করতে একজোট হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন। শেখ হাসিনা আরো বলেছেন, আগামী প্রজন্মের জন্য পৃথিবীকে নিরাপদ রাখতে সবাইকে অবশ্যই ন্যায়সঙ্গত দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত হতে হবে। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য অত্যন্ত বাস্তবসম্মত। গত বছর প্যারিস সম্মেলনে কার্বন নিঃসরণ কমাতে ভূমিকা রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন বিশ্বনেতারা। আর প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষর ও অনুসমর্থন দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ছিল প্রথম সারির দেশ। ফলে প্যারিস সম্মেলনের সূত্র ধরে এবারের মারাক্কেশ সম্মেলন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা। 

উল্লেখ্য, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় প্যারিস সম্মেলনে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক চুক্তি চলতি বছর বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। এটি একটি আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি। এর আগে উষ্ণায়ন রোধে নানা পদক্ষেপ এবং প্রতিশ্রুতির কথা শোনা গেলেও বাস্তবায়ন হয়েছে সামান্যই। প্রকৃতিতে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মারাত্মকভাবেই পড়েছে। ফলে বিশ্বজুড়ে বেড়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সুতরাং উষ্ণায়ন রোধ ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় টেকসই উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় শিল্পোন্নত দেশগুলোর যে সক্ষমতা, তা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর নেই। দুর্যোগে দরিদ্র মানুষের দুর্ভোগ কী চরমে ওঠে, তা বিশ্ববাসীর অজানা নয়। ফলে উষ্ণায়ন রোধ ও ঝুঁকি মোকাবিলার নিরিখে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর যথাযথ বাস্তবায়নই আমাদের প্রত্যাশা। দুঃখজনক হলেও সত্য, এসব প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হন বিশ্বনেতারা। এ পরিপ্রেক্ষিতে মরক্কো সম্মেলন থেকে বড় কোনো প্রাপ্তির খবর মিলবে কিনা, এ নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। এর পরও বাংলাদেশসহ ১১৫ দেশের ৮০ রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং মন্ত্রীরা যে সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন, সে মরক্কো সম্মেলন নিশ্চয়ই ফলপ্রসূ হবে। 

বিশ্বকে বসবাসের উপযোগী রাখতে হলে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের পাশাপাশি সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে এই অভিঘাতের জন্য সব থেকে বেশি দায়ী শিল্পোন্নত দেশগুলোকেই। ন্যূনতম কার্বন নিঃসরণ হয় এমন পরিকল্পনার পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার যাতে কাক্সিক্ষত মাত্রায় বাড়ে, সে জন্য শিল্পোন্নত দেশগুলোর পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তাও অব্যাহত রাখতে হবে- এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা