প্রবাসী আয়ে ভাটা

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০১৬, ১০:৩৪ এএম

দেশের প্রবাসী আয় আশঙ্কাজনক হারে কমছে। গত ছয় বছরের মধ্যে একক মাস হিসেবে সদ্য শেষ হওয়া নভেম্বরে সবচেয়ে কম ৯৫ কোটি ১৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত কবছর ধরে প্রতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়লেও গত অর্থবছরে এসে আড়াই শতাংশ কমে যায়, যা চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরেও অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি সহযোগী দৈনিকের বিশেষ প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য, এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কারণ এভাবে প্রবাসী আয় কমতে থাকলে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। যা দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই উদ্বেগজনক।   
 
উল্লেখ্য, প্রবাসী শ্রমিকদের বেশিরভাগই মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কর্মরত। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে শ্রমিকদের আয় কমে গেছে। এ ছাড়া টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্য কম থাকায় প্রবাসীরা আগের মতো অর্থ পাঠাচ্ছেন না; বিপরীতে ব্যাংকের তুলনায় খোলাবাজারে ডলারের মূল্য বেশি থাকায় ভিন্ন উপায়ে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে প্রবেশ করছে। ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় কমে আসছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রবাসী আয় কমে যাওয়ার পেছনে আরো কিছু কারণ রয়েছে, সেগুলোও খুঁজে বের করা জরুরি। 
এক পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়, চার বছর ধরে প্রবাসে শ্রমিক পাঠানোর হার বেড়েছে। কিন্তু গতবারের চেয়ে এবার প্রবাসী আয় অনেক কম। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে- প্রবাসীরা বৈধ পথে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন না, অথবা তাদের প্রকৃত আয় কমে গেছে। দুটো সম্ভাবনাই দেশের জন্য উদ্বেগের। বিশেষ করে কয়েক বছর ধরে দক্ষ কর্মী পাঠানোর জন্য বিভিন্ন মহল থেকে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হলেও এ বিষয়ে কাক্সিক্ষত কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ অবস্থা মোটেও ইতিবাচক নয়। 

এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়া জরুরি মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এগুলোর মধ্যে- প্রথমত অদক্ষ ও আধা-দক্ষ কর্মীর স্থলে দক্ষ কর্মী তৈরি করে বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া; দ্বিতীয়ত যেসব শ্রমিক প্রবাসে আছেন, তাদের ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা; তৃতীয়ত অভিবাসন ব্যয় কমিয়ে আনা। এবং চতুর্থত বৈধ পথে প্রবাসী আয় দেশে পাঠানোর সুযোগ সৃষ্টি করা ও বৈধ পথে দেশে অর্থ পাঠাতে উৎসাহিত করা।

আমরা আশা করি, উল্লিখিত বিষয়গুলোর বাস্তবায়নসহ প্রবাসী আয় কমে যাওয়ার সঠিক কারণ অনুসন্ধান করবে সরকার। পাশাপাশি প্রবাসী আয় বাড়াতে উদ্যোগ নেবে নতুন নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করার। সেই সঙ্গে প্রবাসে কর্মরতদের প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করবে সরকার।  

সোনালীনিউজ/ঢাকা