ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ রাখার ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। শুক্রবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গত বছরের ১৭ জুলাই নেওয়া হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে এবং এই নীতিমালার অধীনে প্রতিটি হল প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
উপাচার্য আরও জানান, কোনো রাজনৈতিক দলকে বলপূর্বক ঠেকানো হবে না, তবে নিয়ম ভঙ্গের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কঠোর অবস্থান নেবে। আজ শনিবার (৯ আগস্ট) সকাল ১১টায় প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং সংশ্লিষ্ট ছাত্রসংগঠনের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করা হবে।
[254191]
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকালে, যখন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাবির ১৮টি হলে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও প্রকাশ্যে এই কমিটি ঘোষণায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
প্রথমে রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে নামে। শুক্রবার দুপুরের পর থেকে আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। সন্ধ্যার পর টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে স্লোগান দেন— “ওয়ান টু থ্রি ফোর, হল পলিটিক্স নো মোর”। রাত গভীর হলে তারা মিছিলসহ উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।
রাত পৌনে ৩টার দিকে উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, নিবর্তনমূলক কোনো রাজনীতি আমরা চাই না। যে রাজনীতি গণরুমের জন্ম দেয়, সেটি আমরা চাই না। ১৭ জুলাই তোমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছ, তা বলবৎ থাকবে। তিনি আরও যোগ করেন, আমরা সামনে ডাকসু নির্বাচন করতে যাচ্ছি, এবং আমি আশ্বস্ত হয়েছি যে তোমরা এ ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করছো।
উপাচার্যের ঘোষণার পরও আন্দোলনকারীরা হলে রাজনীতির সম্পূর্ণ অবসান দাবি করে ছয় দফা প্রস্তাব দেন—
১. কেন ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হলো—এর জবাব উপাচার্যকে দিতে হবে।
২. ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছাত্রদল, শিবির, বাগছাস, বামপন্থীসহ সব বিদ্যমান গুপ্ত কমিটি বিলুপ্ত করতে হবে।
৩. হলের একাডেমিক এলাকায় সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে ছাত্ররাজনীতির পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা দিতে হবে।
৪. ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব হল কমিটি বিলুপ্ত করতে হবে।
৫. প্রভোস্টদের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে।
৬. দ্রুত ডাকসু নির্বাচন বাস্তবায়ন করতে হবে।
ঢাবি প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক দলকে ফোর্স করতে পারি না, তবে নিয়ম ভাঙা হলে ব্যবস্থা নেবো। আজকের প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
ওএফ