এক ই্উপিতে চার ভার্সিটি

বিশ্ববিদ্যালয়পাড়া আশুলিয়ার বিরুলিয়া

  • হৃদয় আজিজ | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০১৭, ০১:৫৯ পিএম
ড্যাফোডিল ইউনিভারসিটি ক্যাম্পাস, আশুলিয়া। ছবি: সোনালীনিউজ

আশুলিয়া (ঢাকা): রাজধানীর অদূরে আশুলিয়ার বিরুলিয়া ইউনিয়ন এখন বিশ্ববিদ্যালয় পাড়ায় পরিণত হয়েছে। বিরুলিয়ার শুধু দত্তপাড়াতেই রয়েছে ৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি প্রস্তাবিত মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস। ফলে অবহেলিত ওই এলাকাটি হয়েছে এখন উন্নয়নের মডেল।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দেশ ভাগের আগে এলাকাটি ছিলো জমিদারদের দখলে। সেখানে তেমন কোনো জনবসতি ছিল না। পরবর্তী সময় এটি বনবিভাগের অধীনে চলে যায়। এক সময় শিয়াল, পোকা-মাকড় ও জীবজন্তুর ভয়ে দিনের বেলাতে কেউ ওই এলাকা মাড়াতো না। মাত্র ৮ বছরের ব্যবধানে সেই জঙ্গলপূর্ণ এলাকাই হয়ে উঠেছে ঝকঝকে-তকতকে, মেধাবী তরুণ-তরুণীদের পদচারণায় মুখরিত।

ছবি: সোনালীনিউজ

তবে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই প্রসার ঘটেনি এখানে শিল্প কারখানার সংখ্যাও কম নয়। শিল্পনগরী যেমন তেমনি শিক্ষানগরী হিসেবে দ্রুত সম্প্রসারণ হচ্ছে। এ কারণে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে মানুষ এসে এখানে বসবাস শুরু করেছে। রয়েছে অর্ধশত পোশাক কারখানাসহ অন্যান্য শিল্পকারখানাও। এসব কারখানায় কর্মসংস্থান খুঁজে পেয়েছে লক্ষাধিক মানুষ।

নব্বই দশকের আগে থেকেই বিরুলিয়ায় বসবাস করে আসছেন তুহিন আহমেদ। অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তুহিন সোনালীনিউজকে জানান, আমার বাবা যখন এখানে আসেন তখন কোনো ঘরবাড়ি দেখা যায়নি। চারদিকে শুধু গাছপালা আর ধূ-ধূ মাঠ। আর এখন পুরোটাই পাল্টে গেছে। লাখ লাখ মানুষে ভরে গেছে এলাকা। জমির দামও নাগালের বাইরে চলে গেছে।

বিরুলিয়ার দত্তপাড়ায় গড়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ব্রাক, সিটি ইউনিভারসিটি, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভারসিটি ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভারসিটি। এ ছাড়াও রয়েছে প্রস্তাবিত ফয়জুল্লাহ খান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। 

তুহিন আহমেদ আরো জানান, এখনে মেডিকেল কলেজ হলে এলাকার চিকিৎসা সেবার সুবিধা বাড়বে। দত্তপাড়ার উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের আশুলিয়া মডেল টাউন প্রকল্প ঘোষণা দেয়ার পরেই মূলতই বিভিন্ন ডিভলোপারস কোম্পানি জমি কেনা শুরু করে। এর ফলে উন্নয়নের দিকে কয়েক ধাপ এগিয়ে যায় বিরুলিয়া।

তবে বিরুলিয়া এলাকার উন্নয়ন যেভাবে হচ্ছে সেভাবে যোগযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে না- এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। এতে এখানে নতুন গড়ে ওঠা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তে আসা দেশ-বিদেশের শিক্ষার্থীদের পড়তে হয় নানা ভোগান্তিতে। 

ছবি: সোনালীনিউজ

এমন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে ড্যাফোডিল ইউনিভারসিটির ফার্মেসি বিভাগের ছাত্র জোবায়েদ উদ্দিন সোনালীনিউজকে বললেন, ‘এখানকার রাস্তাঘাটের অবস্থা উন্নত নয়। নিজস্ব বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা ছাড়া পাবলিক ট্রান্সপোর্ট তেমন নেই বললেই চলে। এ কারণে যারা ঢাকা বা এর বাইরে থেকে এখানে পড়তে আসে তাদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।’

মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভারসিটির ‘ইলেকট্রিক্যাল’ বিভাগের ছাত্র আলতাব আহমেদ বললেন, ‘আমি তেজগাঁও থেকে আসি। ইউনিভারসিটির বাস ছাড়া ওখান থেকে আসার সহজ কোনো উপায় নেই। তাছাড়া এলাকার রাস্তাঘাট ভলো না। এ কারণ গাড়ি চলাচলও কম।’

বিরুলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও রয়েছে বহু স্কুল-কলেজ, প্রাইমারি স্কুল, কিন্ডার গার্ডেন। এ কারণে রাজধানীর অদূরের এই অবহেলিত এলাকা পরিণত হয়েছে শিক্ষানগরীতে।

বিরুলিয়ার বাসিন্দা ও খাগানবাজরের দোকানদার কবির আহমেদ বললেন, ‘সরকার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা খানিকটা নজর দিলেই শিক্ষার মডেল এলাকায় পরিণত হতে পারে এই বিরুলিয়া।

সোনালীনিউজ ডটকম/ঢাকা/এআই