প্রেম করছেন জয়া

  • বিনোদন প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০১৯, ০৩:০৩ পিএম

ঢাকা : দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। আগামী ২৭ ডিসেম্বর কলকাতায় মুক্তি পাবে তার সিনেমা ‘রবিবার’। এই সিনেমা প্রসঙ্গে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জয়া জানিয়েছেন, আমি প্রেম করছি কিন্তু বিয়ের তারিখ এখনো ঠিক হয়নি।

সেই সাক্ষাৎকারে জয়ার কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, কলকাতার এক তারকা জানিয়েছেন যে, জয়া বাংলাদেশের একজনের সাথে প্রেম করছেন এবং আগামী বছর বিয়ে করবেন। এই প্রশ্নের উত্তরে জয়া কৌশলে বলেন, ওহ! আমার সম্পর্কে এত কিছু কে বললেন? এরপর জয়ার কাছে জানতে চাওয়া হয় তাহলে এই বিয়ের খবর গুজব কি না? এ সময় বাংলাদেশের এই অভিনেত্রী বলেন, না। আমি প্রেম করছি। সে বাংলাদেশি তবে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কেউ নন। কিন্তু বিয়ের দিনক্ষণ এখনো ঠিক হয়নি।

জয়া আহসান বর্তমানে কলকাতায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৌশিক গাঙ্গুলীর ‘অর্ধাঙ্গিনী’ সিনেমার শুটিংয়ে। এছাড়া ২৭ ডিসেম্বর মুক্তি পেতে যাওয়া ‘রবিবার’ সিনেমার প্রচারণায়ও সময় দিচ্ছেন এই অভিনেত্রী। সিনেমাটিতে প্রথমবার প্রসেনজিতের বিপরীতে দেখা যাবে তাকে।

নাটকের জয়া, সিনেমার জয়া-তার প্রতিটি পদক্ষেপ, ধীরে ধীরে জয়ার এগিয়ে যাওয়ার সময়। সেই জয়া আহসান এখন দেশের সীমানা ছাড়িয়ে চুটিয়ে কাজ করছেন পাশের দেশ ভারতে, কলকাতার ইন্ডাস্ট্রিতে তার এখন দারুণ জনপ্রিয়তা, বাঘা বাঘা পরিচালক তার কাজে আস্থা খুঁজে পাচ্ছেন।

দুই বাংলার আলোচিত অভিনেত্রী জয়া আহসান। ইদানীং বাংলাদেশের চেয়ে কলকাতার সিনেমা নিয়েই বেশি ব্যস্ততা।

মুক্তি পেয়েছে জয়া অভিনীত ভারতীয় সিনেমা ‘কণ্ঠ’। এর আগে এ বছরের মে মাসে কলকাতায় জয়া অভিনীত ‘কণ্ঠ’ ছবিটি মুক্তি পায়। এ ছবি সম্পর্কে জয়া বলেন, ‘কণ্ঠ’ কলকাতায় ভালো চলেছে। অল্প সময়ে ছবিটি ভালো ব্যবসা করে। পরিচালকদের প্রত্যাশা পূরণ হয়। দর্শকদের পাশাপাশি কলকাতার চিকিৎসকরা ছবিটির খুব প্রশংসা করেছেন। তারা বলেছেন, ছবিটি শুধু ভারতে নয়, অন্যান্য দেশেও মুক্তি দেওয়া উচিত।

জয়া আহসানের দুর্দান্ত অভিনয়ের স্বাক্ষর দেখা গেছে নাটকে। বিটিভির ‘এনেছি সূর্যের হাসি’ থেকে শুরু করে ‘শঙ্খবাস’, ‘লাবণ্যপ্রভা’ কিংবা ‘চৈতা পাগল’ অথবা ‘তারপরেও আঙুরলতা নন্দকে ভালোবাসে’-যেখানেই জয়া আহসান অভিনয় করেছেন, প্রত্যেক জায়গাতেই তার অভিনয়প্রতিভায় মুগ্ধ হয়েছে সবাই। শূন্য থেকে উঠে এসে দারুণ সব অভিনেতার সঙ্গে কাজ করেছেন। এত সব মেধার ভিড়েও নিজেকে আড়াল হয়ে যেতে দেননি, বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন, এ প্রজন্মের সবচেয়ে মেধাবী অভিনেত্রী তিনিই।

চলচ্চিত্রের বিশাল পটভূমিতে জয়ার আগমন মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ব্যাচেলর দিয়ে। খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ রোলে ছিলেন না। ততদিনে টিভি পর্দায় প্রায় নিয়মিত তিনি। ধারাবাহিক নাটক করছেন, এক ঘণ্টার নাটকেও দেখা যায় তাকে। বেছে বেছে কাজ করার স্বভাবটা তার অনেক পুরনো। এ কারণে ক্যারিয়ারে বাজে কাজ খুব একটা নেই জয়ার। মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারের আসরে তখন প্রতিবছর দেখা মেলে তার, জয়ার দারুণ অভিনয় নিয়ে আলোচনা হয় নাট্যজগতের মানুষজনের মধ্যে। তিনি পুরস্কার বগলদাবা করে নিয়ে যান ঘরে।

তবে জয়া আহসান নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিলেন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ পরিচালিত ‘গেরিলা’ সিনেমায়। এর মাঝে ‘ডুবসাঁতার’ আর ‘ফিরে এসো বেহুলা’ নামের দুটি সিনেমায় দেখা গিয়েছিল তাকে। কিন্তু মূলধারার সিনেমা না হওয়ায় সাড়া ফেলতে পারেনি সেগুলো। ২০১১ সালে গেরিলায় কাজ করে সবটুকু আলো নিজের দিকে টেনে নিয়েছিলেন জয়া। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘরে তুলেছিলেন তিনি সেই সিনেমায় দুর্দান্ত অভিনয় করে। বিলকিস বানু চরিত্রে সেই প্রতিবাদী গৃহবধূকে যারা দেখেছেন, তাদের ভোলার কথা নয় মোটেও।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়া আহসান আরো দুবার জিতেছেন চোরাবালি আর জিরো ডিগ্রি সিনেমায় অভিনয়ের জন্য।

২০১৩ সালে কলকাতার বিখ্যাত পরিচালক অরিন্দম শীল তার ‘আবর্ত’ সিনেমায় নিয়েছিলেন জয়াকে, এরপর থেকে নিয়মিত সেখানে কাজ করছেন এই গুণী শিল্পী। পর্দায় দারুণ অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে অন্য পরিচালকরাও সিনেমা অফার করছেন জয়া আহসানকে। এর মধ্যেই সৃজিত মুখার্জি, ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরী, কৌশিক গাঙ্গুলীর মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে জয়ার, অরিন্দমের সঙ্গে তো একাধিক সিনেমায় কাজ করেছেন।

কলকাতার শীর্ষ ১০ অভিনেত্রীর তালিকায়ও জয়ার অবস্থান একদম ওপরের দিকে। জয়া আহসান কলকাতায় মজে গেছেন বা বাংলাদেশের সিনেমায় একদমই কাজ করছেন না, ব্যাপারটা মোটেও তা নয়।

শিল্পী জয়ার সবচেয়ে বড় গুণ যেটা, সেটা হচ্ছে সাহস। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন তিনি, নিজেকে ভাঙছেন, গড়ছেন, প্রতিটি সিনেমায় নতুন অবতারে হাজির হচ্ছেন দর্শকের সামনে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই