হুমায়ুন ফরিদীর জন্মদিন রোববার

  • বিনোদন রিপোর্টার | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৯, ২০১৬, ১২:৩৮ পিএম

মঞ্চ থেকে তার অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু। এরপর ছোটপর্দা কিংবা বড় পর্দা সব জায়গায় সাফল্য দেখিয়েছেন। ছড়িয়েছেন মুঠো মুঠো সোনা। নান্দনিক অভিনয় নৈপুণ্যে মুগ্ধ করেছেন কোটি মানুষকে। তিনি অভিনয় শিল্পের অনন্য কারিগর হুমায়ুন ফরিদী।

আজ (রোববার ২৯ মে) এ গুণী অভিনেতার জন্মদিন। ১৯৫২ সালের এমন একটি দিনেই পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিলো এ গুণী ব্যাক্তিত্বের। হুমায়ুন ফরিদীর জন্মদিনে তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সাজানো হল এই জীবনীভিত্তিক প্রতিবেদন।

বরেণ্য অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি ১৯৫২ সালে ঢাকার নারিন্দায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম এটিএম নূরুল ইসলাম ও মা বেগম ফরিদা ইসলাম। চার ভাই-বোনের মধ্যে তার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। ইউনাইটেড ইসলামিয়া গভর্নমেন্ট হাই স্কুলের ছাত্র ছিলেন তিনি। মাধ্যমিক স্তর উত্তীর্ণের পর চাঁদপুর সরকারী কলেজে পড়াশোনা করেন। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হলে থাকতেনে এ অভিনেতা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুবাদেই সান্নিধ্য পান নাট্যচার্য সেলিম আল দীনের। সেলিম আল দীনের হাত ধরেই জড়িয়ে পড়েন গ্রুপ থিয়েটারের নাট্যচর্চার সঙ্গে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃবিভাগ নাট্য উৎসবে অংশ গ্রহণ করলেও মূলত ঢাকা থিয়েটারের নাট্যচর্চার মধ্য দিয়েই নিয়মিত নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন তিনি।

শহিদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে আবদুল্লাহ আল মামুন নির্মিত ‘সংশপ্তক’ ধারাবাহিকে কানকাটা রমজান চরিত্রে অভিনয় করে দারুন প্রশংসিত হন তিনি। শুরু হয় ছোটপর্দায় হুমায়ুন ফরিদীর অভিনয় আধিপত্য।

এরপর দীর্ঘ সময় তিনি ছোটপর্দায় সাফল্যের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। ২০১২ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন। হুমায়ুন ফরিদী চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন ১৯৯০-এর দশকে। দীর্ঘ সময় সিনেমায় অভিনয় করে নিজেকে তুলে ধরেছেন।

মঞ্চনাটক : কিত্তনখোলা, মুন্তাসির ফ্যান্টাসি, কেরামত মঙ্গল, ধূর্ত উই প্রভৃতি।

টিভি নাটক : নিখোঁজ সংবাদ, হঠাৎ একদিন, পাথর সময়, সংশপ্তক, সমূদ্রে গাংচিল, কাছের মানুষ, মোহনা, নীল নকশাল সন্ধানে, দূরবীন দিয়ে দেখুন, ভাঙ্গনের শব্দ শুনি, কোথাও কেউ নেই, সাত আসমানের সিঁড়ি, সেতু কাহিনী, ভবের হাট, শৃঙ্খল, জহুরা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, প্রতিধ্বনি, গুপ্তধন, সেই চোখ, অক্টোপাস, বকুলপুর কত দূর, মানিক চোর, আমাদের নুরুল হুদা প্রভৃতি।

চলচ্চিত্র : সন্ত্রাস, দহন, লড়াকু, দিনমজুর, বীর পুরুষ, বিশ্ব প্রেমিক, আজকের হিটলার, দুর্জয়, শাসন, আঞ্জুমান, আনন্দ অশ্রু, মায়ের অধিকার, আসামী বধু, একাত্তরের যীশু, প্রাণের চেয়ে প্রিয়, ভালোবাসি তোমাকে, কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি, প্রবেশ নিষেধ, ভণ্ড, অধিকার চাই, মিথ্যার মৃত্যু, বিদ্রোহী চারিদিকে, মনে পড়ে তোমাকে, ব্যাচেলর, জয়যাত্রা, শ্যামল ছায়া, দুরত্ব, কি যাদু করিলা, মেহেরজান প্রভৃতি।

ব্যক্তি জীবন : ব্যক্তিগত জীবনে হুমায়ুন ফরিদী দু’বার বিয়ে করেন। প্রথম বিয়ে করেন ১৯৮০’র দশকে। ‘দেবযানী’ নামের তার এক মেয়ে রয়েছে এ সংসারে। পরবর্তীতে বিখ্যাত অভিনেত্রী সুবর্ণা মোস্তাফাকে তিনি বিয়ে করলেও তাদের মধ্যেকার বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে ২০০৮ সালে।

পুরস্কার ও স্বীকৃতি : ২০০৪ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন হুমায়ুন ফরীদি। নাট্যাঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাকে সম্মাননা প্রদান করেন।

মৃত্যুবরণ : ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন এ অভিনেতা।