‘প্রবল’ ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা, ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৪, ০৯:০৬ এএম

ঢাকা: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি আরো ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। ধাপে ধাপে শক্তি বাড়িয়ে এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদরা।

বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকলে গভীর নিম্নচাপটি শনিবার সকালে ঘূর্ণিঝড়ে এবং শনিবার রাতে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পরে। এরপর রোববার সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যে সেই ঝড় পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছেন ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা।

ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর নাম হবে ‘রেমাল’। এ নাম প্রস্তাব করেছে ওমান। আরবিতে এর অর্থ ‘বালি’। আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয় বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপ। এ অঞ্চলের ১৩টি দেশের দেওয়া নামের তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে নতুন ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঝড়ের গতিপথ নির্দিষ্ট হতে আরো সময় লাগবে।

“বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম দিয়ে এটি অতিক্রম করতে পারে। বাংলাদেশের খুলনা বিভাগ, সুন্দরবন এবং পশ্চিমবঙ্গে এটি আঘাত হানতে পারে। তবে গতিপথ যদি বাংলাদেশের বাইরে দিয়েও যায়, তাও দেশে এর প্রভাব পড়বে।”

আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, শুক্রবার মধ্যরাতে গভীর নিম্নচাপটি চটগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

ওই সময় নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার; যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।

[224085]

গভীর নিম্নচাপের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে না যেতে বলা হয়েছে।

সাগরে কোনো ঘূর্ণিবায়ুর চক্র তৈরি হলে এবং এর কেন্দ্রের কাছে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ৬২ কিলোমিটারের বেশি হলে তখন তাকে ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শক্তির বিচারে ঘূর্ণিঝড়কে চারটি মাত্রায় ভাগ করেছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর।

গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম বা জিএফএস এর পূর্বাভাস মডেলের ভিত্তিতে বঙ্গোপসাগরে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের এই গতিপথের আভাস দিয়েছে ট্রপিকাল টিডবিটস ডটকম। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এই পূর্বাভাসে এবং গতিপথে পরিবর্তন আসতে পারে।

ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সর্বশেষ ছয় ঘণ্টায় নিম্নচাপটি পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর থেকে ঘণ্টায় ৮ কিলোমিটার গতিতে উত্তর উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আরো শক্তি সঞ্চয় করে এই ঘূর্ণিবায়ুর চক্র শনিবার সকাল নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এরপর উত্তর দিকে অগ্রসর হতে হতে শনিবার মধ্যরাতে পরিণত হতে পারে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে।

এআর